রতুয়ার মহানন্দা টোলায় গঙ্গার ভাঙ্গনে সব হারিয়ে ত্রাণ শিবিরে খাওয়া-দাওয়া বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র।
তিন মাস পরে নাতনির বিয়ে। তাঁর বিয়ের টাকা জোগানোর জন্য ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন ছেলে। ভাঙনে ঘর হারিয়ে বাড়ির মেয়ের বিয়ে নিয়ে চিন্তায় মালদহের রতুয়ার বাসিন্দা দুর্গা চৌধুরী যাদব। তিনি বলেন, “তিন মাস পরেই নাতনির বিয়ে। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। এখন পুরো বাড়িই নদীর তলায় চলে গিয়েছে। নতুন করে ঘর তৈরি করব, না নাতনির বিয়ে দেব, ভেবে মাথা যেন কাজ করছে না।”
তাঁর মতোই বিপাকে পড়ে গিয়েছে রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তুটোলা গ্রামের ২৫টি পরিবার। তাদের কেউ ত্রিপলের নীচে, কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছে আত্মীয়ের বাড়িতে। স্থানীয়দের দাবি, মহানন্দাটোলায় নাককাট্টি সেতু লাগোয়া খেলার মাঠ রয়েছে। সে মাঠে ত্রিপল টাঙিয়ে আসবাব রাখা হয়েছে। এক জন করে সদস্য আসবাব পাহারা দিচ্ছেন, দাবি ভাঙন দুর্গতদের। পুনর্বাসনের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, “সরকার থেকে চিঁড়ে, খিচুড়ি দিচ্ছে। তবে শুধু খিচুড়ি, চিঁড়ে দিলেই হবে না, ফের ঘর দিতে হবে। কারণ, ভাঙনে পাকা বাড়ি হারিয়ে আমরা উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছি।” ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে বলে জানান রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেছেন, “পুনর্বাসনের জন্য সরকারি খাস জমির প্রয়োজন রয়েছে। খাস জমি না থাকলে, পুনর্বাসন দেওয়া যায় না। পুনর্বাসনে খাসজমির খোঁজ চলছে।”
তবে শুক্রবার, নতুন করে ভাঙন না হওয়ায় স্বস্তিতে সেচ দফতর। এ দিন বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে অস্থায়ী ভাবে কাজ করা হয়েছে। সেচ দফতরের দাবি, দুই দিন ধরে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে কাজ চলছে। এ ছাড়া, নদীগুলির জলস্তরও বিপদসীমার নীচে রয়েছে। এ দিন গঙ্গা, ফুলহার এবং মহানন্দা নদীর জলস্তর আরও কমেছে। ভাঙন নিয়ে নদীগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান সেচ দফতরের কর্তারা।