দর্শন: বালুরঘাটের আকাশে সূর্যগ্রহণ। আর তা দেখতে ভিড় খুদেদের। রবিবার বালুরঘাট ও রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বৃষ্টি, কোথাও মেঘলা আকাশ। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সূর্যগ্রহণ দেখাতে পারলেন না গৌড়বঙ্গের তিন জেলা- মালদহ ও দুই দিনাজপুরের বাসিন্দারা। আকাশ মেঘলা থাকলেও বিজ্ঞানমঞ্চের তরফে সূর্যগ্রহণ দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তিন জেলাতেই।
জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, ডিজিট্যাল যুগেও এখনও গ্রহণ নিয়ে অন্ধকারে সাধারণ মানুষের একাংশ। এ দিন সকাল ন’টার পর থেকে সুনসান হয়ে যায় জেলাগুলির সদর শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই। একই সঙ্গে গ্রহণের পরে স্নান করার হিড়িক পড়ে যায়। সূর্যগ্রহণের জন্য ফের ফেরে লকডাউনের ছবি। মালদহের ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আনলক-১ হতেই চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল জেলা। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। তবে এ দিন ফের লকডাউনের ছবি দেখা গিয়েছে।”
এ দিন মালদহের ইংরেজবাজার শহরের অতুল মার্কেট এবং বাঁধ রোড এলাকায় সূর্যগ্রহণ দেখার ব্যবস্থা করেছিল বিজ্ঞানমঞ্চ। মালদহের মতো উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটেও বিজ্ঞানমঞ্চের প্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষকে সূর্যগ্রহণ দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে এ দিন তিন জেলাতেই কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে, কখনও আকাশ মেঘলা থেকেছে। দুপুরে আকাশ সামান্য পরিষ্কার হতেই চশমা, সোলার ফিল্টার দিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখতে বিজ্ঞানমঞ্চের কেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমাতে শুরু করেন উৎসুক মানুষেরা। মালদহের বিজ্ঞানমঞ্চের সহ-সম্পাদক সুনীলকুমার সরকার বলেন, “সূর্যগ্রহণ প্রাকৃতিক বিষয়। গ্রহণের পর স্নান করা, বা গ্রহণের সময় না খাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রহণ নিয়ে একাংশ মানুষের মধ্যে এখনও ভুল ধারনা রয়েছে। সেই ধারণা ভাঙার জন্য আমাদের লাগাতার প্রচার চলছে।”
আকাশ মেঘলা থাকলেও রীতি মেনে যেন গ্রহণের পর স্নান করলেন বহু মানুষ। গ্রহণ শুরুর আগেই খাবার খাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যেরা। বিজ্ঞানমঞ্চের উত্তর দিনাজপুর জেলার সহ-সম্পাদক গৌতম সিংহ বলেন, “করোনার সঙ্গে সূর্যগ্রহণের কোনও সম্পর্ক নেই। ডিজিট্যাল যুগেও এখনও অন্ধকারে রয়েছেন সমাজের একাংশ মানুষ। তাঁদের কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য আমাদের কাজ চলছে।”