নারাজ: ল’মোড়ে চলছে জমি হস্তান্তরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা প্রকল্পে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়তে উদ্যোগী রাজ্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সোসাইটির মাধ্যমে তা গড়তে হবে। কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্যও মিলবে। সে কারণে রাজ্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই জমির ‘ইউজ়ার রাইট’ হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছে তাঁদের। কর্মসমিতির সভায় সম্প্রতি সে সিদ্ধান্ত অনুমোদিতও হয়েছে। তবে এই হস্তান্তরে জমি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা করে, আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষক-পড়ুয়া-প্রাক্তনী ও শুভানুধ্যায়ীদের মঞ্চ। মঙ্গলবার ল’মোড়ে পথসভা করে। সিবিআই তদন্ত, বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তাঁরা।
যদিও উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র সাফ জানিয়েছেন, ‘‘জমির মালিকানা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেই থাকবে। বেসরকারি কোনও সংস্থাকে তা দেওযা হচ্ছে না।’’ তা নিয়েই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও আন্দোলন মঞ্চের অন্যতম সমরকুমার বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষপদে রয়েছেন, উপাচার্য তা ভুলে গিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতার মতো আচরণ করছেন, কথা বলছেন। কাজে করছেন এক রকম, বলছেন আর এক রকম।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন আইনি পরামর্শদাতা আইনজীবী মৃগেন্দ্র চতুর্বেদীর কথায়, ‘‘ইউজ়ার রাইট হস্তান্তরে মালিকানা পরিবর্তন হয় না। তবে ইউজ়ার রাইট হস্তান্তরের পরে, তারা ওই জমিতে যদি কয়েক কোটি টাকা খরচ করে স্থায়ী পরিকাঠামো গড়লে, তা ফেরত পাওয়া মুশকিল। লিজ়, পাট্টার জমি একই ভাবে মালিকানা হস্তান্তর হয় না। কিন্তু সে জমি ফেরত পাওয়া মুশকিল।’’ তাঁর কথায়, শিলিগুড়িতে মাটিগাড়ায় একটি উপনগরীর জমি নির্মাণকারী সংস্থাকে লিজ়ে দেওয়া হয়েছে। সেই জমি কি আর ফেরত পাবে সরকার? যাঁরা সেখানে বাড়িঘর কিনছেন, তাঁরা কি আর জমি ফেরত দেবেন?
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, বিষয়টি তাঁরাও আঁচ করেছেন। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনকারীদের তরফে অর্ধেন্দু বিশ্বাস জানান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নেওয়ার ঘটনাতেও সেখানে পড়ুযাদের প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। তাঁরাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন সমর্থন করেছেন। অনেকেই যোগাযোগ করছেন, আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন। ক্যাম্পাস লাগোয়া এলাকাতেও পথসভার কথা ভাবা হয়েছে।