প্রতীকী ছবি
করোনায় আক্রান্ত দুই ব্যক্তির মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। এক জন চম্পাসারি এলাকার বাসিন্দা, অন্য জন নাগরাকাটার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বাসকষ্ট থাকায় বুধবার দু’জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের রিকু ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। চম্পাসারির বাসিন্দার বয়স ৫৫। তিনি যকৃতের সমস্যায় ভুগছিলেন। নাগরাকাটার বাসিন্দার বয়স ৩০। শ্বাসকষ্টের রোগী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘মৃত্যুর পরে দু’জনের লালারস পরীক্ষা রিপোর্ট এলে দেখা যায় দু’জনেই করোনা পজ়িটিভ।’’ এ ছাড়াও এদিন শিলিগুড়িতে অন্তত ৯ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলছে। তার মধ্যে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কিশোরী রয়েছে। তারা পরিবারের সঙ্গে চেন্নাই থেকে ফিরে একটি হোটেলে কোয়রান্টিনে রয়েছেন। আছেন এক সেলুন-কর্মী, মহকুমা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক ব্যক্তিও।
সন্দেহভাজন ওই রোগীদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই হাসপাতাল উত্তরবঙ্গের আট জেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসার অন্যতম ‘টার্সিয়ারি রেফারাল সেন্টার’। প্রত্যন্ত এলাকার অসুস্থদের অনেকেই চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। তাই এটি করোনা চিকিৎসা পরিষেবার বাইরে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। মাস দুয়েক আগে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য টাস্ক ফোর্সের অন্যতম চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী শিলিগুড়ি এসে এ কথা জানিয়েছিলেন। তখন কাওয়াখালিতে একটি নার্সিংহোমকে সারি হাসপাতালে বদলানো হয়। সন্দেহভাজন রোগীদের সেখানেই পাঠানো হচ্ছিল। আর করোনা পজ়িটিভ হলে তাঁকে পাঠানো হচ্ছিল মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে।
মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে শয্যা ভরে যেতেই কাওয়াখালির সারি হাসপাতালকে কোভিডে বদলানো হয়। তার পর থেকে সন্দেহভাজন রোগীদের ভর্তি করানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। তাতে অন্য রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা বিপন্ন হতে বসেছে বলে দাবি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি অন্য রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার দিকটি বজায় রাখতে। তবে করোনার রোগী থাকলে সেটা খুবই মুশকিল।’’ করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘পরবর্তিত পরিস্থিতিতে আপাতত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সন্দেহভাজনদের রাখা হচ্ছে। অন্যত্র সারি হাসপাতালের জায়গা দেখা হচ্ছে।’’
বর্তমানে মেডিক্যালে করোনা সন্দেহে অন্তত ৩৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। মেডিক্যালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্তত ১৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে এর মধ্যেই চিকিৎসাধীন। তাঁদের সংস্পর্শে আসা অনেক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।