লকডাউন খুলতেই ঢল নামলো মানুষের। বালুরঘাটের মার্কেট এলাকায়। ছবি: অমিত মোহান্ত
দুদিনের ভিড় জমল একদিনে। বাজার থেকে নিমেষে উধাও হল কাঁচালঙ্কা থেকে টম্যাটো।
শনিবার বালুরঘাটে দুপুর ২টো থেকে আংশিক লকডাউন শুরু হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার পূর্ণ লকডাউনের পরে শনিবার সকাল হতেই তহবাজারে তুমুল ভিড়। অভিযোগ, রাস্তায় দেদার চলল মোটরবাইক, স্কুটি, টোটো, অটোরিকশা, সাইকেল, ট্রাক।
সাধারণ মানুষের একাংশ করোনা-ভয়কে এ ভাবে উপেক্ষা করলেও, এ দিন মালদহের ল্যাব থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে পাঠানো রিপোর্টে নতুন করে জেলায় ১০৫ জন আক্রান্তের হদিস মিলল। অ্যান্টিজেন কিটে পজ়িটিভ আরও ৮ জন। তাতে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ৩ হাজার ১৬৯ জন। বালুরঘাট শহরে এ দিন আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ জন। তাতে শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা পৌঁছল ৫৫০-এ।
এ দিন শহরের নিউমার্কেট এলাকার মোক্তারপাড়া রোড থেকে সাধনা মোড়, সাড়ে তিন নম্বর মোড় হয়ে বাসস্ট্যান্ড এলাকার রাস্তায় যানজট হয়। অভিযোগ, প্রায় এক কিলোমিটার ওই পথ পেরোতে আধঘন্টা সময় লাগে অনেকেরই।
শহরের একাধিক স্বাস্হ্যশিবিরে বিনামূল্যে অ্যান্টিজেন কিটে লালারসের নমুনা পরীক্ষা এবং শহরে ধারাবাহিক নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা থেকে রোজ জেলা জুড়ে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধির পিছনে রাস্তা-বাজারের ভিড় অন্যতম বড় কারণ বলে আগেই সতর্ক করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্হ্য আধিকারিক সুকুমার দে। অভিযোগ, তার পরেও ছবিটা বদলায়নি।
জেলাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ভিড় নিয়ন্ত্রণ বা দূরত্ববিধি নজরে রাখতে নেই পুলিশের শাসন। পূর্ণ লকডাউনে বালুরঘাটে সকাল থেকে থানার অফিসার ও পুলিশকর্মীরা যে ভাবে সক্রিয় থাকেন, আনলক-পর্বে তা করা হয় না বলেও অভিযোগ। যদিও পুলিশের বক্তব্য, স্বাস্থ্যবিধি পালন করা না হলে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
ডানলপ মোড় থেকে তহবাজারে আনাজ কিনতে এসেছিলেন শিক্ষক জয়ন্ত সরকার। তিনি বলেন, ভিড়ে এ দোকানে সে দোকানে ঘুরেও কাঁচালঙ্কা পেলাম না।। এ দিন বাজারে প্রতি কেজি কাঁচালঙ্কার ২০০ টাকা দর উঠেছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টা বাজতেই সব শেষ। গাজর ও টম্যাটো কিনতে গিয়েও নাজেহাল হলেন নিউমার্কেট এলাকার দিলীপ আগরওয়াল। তার কথায়, ১০০ টাকা কেজির গাজর ও টম্যাটো মুহূর্তে শেষ।
ভিড় বাজারে পিছন থেকে ধাক্কা খেলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ সাহা। ক্ষুব্ধ কন্ঠে তিনি বললেন, ধাক্কা দিয়ে চলছেন কেন। সামাজিক দূরত্ব বলে কি কিছু নেই ? নির্বিকার ওই ব্যক্তি পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। তাঁর মুখে মাস্কও ছিল না।