বন্ধ রেলগেট। তবু ঝুঁকি নিয়ে অবাধে পারাপার চলছে। সামসি রেলগেটে। সোমবারের ছবি।
ট্রেন আসার মিনিট পাঁচেক আগেই লেভেল ক্রসিংগুলিতে রেলগেট নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তোয়াক্কা না করে মহাবীরস্থানের কাছে গেটের নীচ দিয়ে ঢুকে লাইন পারাপার করছেন লোকজন। সাইকেল নিয়েও সেখান দিয়ে পারাপার চলছে। এমনকি, ফাঁকতালে স্কুটার টেনে হিঁচড়ে শুইয়ে গেটের নীচ দিয়ে পার করে নিলেন দুই যুবক। আশপাশ থেকে অনেকে ‘ট্রেন আসছে’ বলে সতর্ক করলেও লাভ হয়নি। শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন লেভেল ক্রসিংগুলি ঘুরে দেখে সোমবার কম-বেশি এমনই ছবির দেখা মিলছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই লাইন পারাপার করছেন লোকজন। মাঝেমধ্যে এর জন্য দুর্ঘটনাও ঘটছে।
রবিবার রাতে শিয়ালদহ মেন লাইনে খড়দহ স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ে এ ভাবেই অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে একটি গাড়ি। নিয়ম ভেঙে গাড়িটির চালক লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ হওয়ার সময় জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়েন। এর পরে এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাড়িটি। ওই ঘটনার পরে শিলিগুড়িতেও লেভেল ক্রসিংয়ে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়ছে। শিলিগুড়ির ডাঙ্গিপাড়া, মহাবীরস্থান, ফুলেশ্বরী, চাঁদমনি, ঠাকুরনগর, পোড়াঝাড়-সহ আরও কিছু জায়গার লেভেল ক্রসিংয়েও প্রায়শই সতর্ক করা সত্ত্বেও
অনেকে গেট তুলে ঢুকে লাইন পার হন। মাঝেমধ্যেই গেটম্যানদের ধমক দিতে দেখা যায়। কোথাও আবার লোকজনের বিপজ্জনক পারপার বন্ধ করাতে ছুটতেও হয় তাঁদের।
কিন্তু তাতেও অবস্থার বদল হয় না বলেই অভিযোগ।
শিলিগুড়ি সংলগ্ন ঠাকুরনগর লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন আসার আগে গেট নামানো হয়। কিন্তু অভিযোগ, নিত্যদিন গেট বন্ধ থাকাকালীন মোটরবাইক, স্কুটার নিয়ে গেটের নীচ দিয়ে কোনও মতে ঢুকে পার হন প্রচুর লোকজন। কিছু জায়গায় এর আগে দুর্ঘটনা এড়াতে রেলগেটগুলি নতুন ভাবে বসানো হয়েছে, যাতে কেউ মোটরবাইক, স্কুটার নিয়ে নীচ দিয়ে পারাপার করতে না পারে। এক গেটম্যানের দাবি, “রেলগেট বন্ধ থাকলেও, সে সময় ঝুঁকি নিয়ে অনেক মানুষ পারাপার করেন। মানা করলেও, শুনতে চান না। অনেক সময় পর পর ট্রেন থাকায় রেলগেট বেশি সময়ের জন্যও বন্ধ রাখতে হয়। তখন অনেকে পারাপার করতে থাকেন।”
এর আগে, শিলিগুড়ির বেশ কয়েক জায়গায় এমনভাবে পারপার করতে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। রেললাইনের উপর বসে আড্ডাও চলে বহু জায়গায়। ফুলেশ্বরী, মাটিগাড়ার কাছে দিনভর লাইনের উপরে ভিড় হয়ে থাকে। এ নিয়ে রেল ও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে লাগাতার নজরদারি ও কড়া পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন অনেকে।