চিকিৎসকের অভাবে ধীরগতিতে চিকিৎসা পরিষেবা মেলার অভিযোগ। ফলে, ভিড় উপচে রোগীদের। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে। ছবি: গৌর আচার্য
একেই জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতিতে, তার উপরে পর্যাপ্ত সিনিয়র চিকিৎসক মিলছে না। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মেডিক্যালের বহির্বিভাগে পরিষেবা ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বহির্বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখাতে রোগীর ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত সিনিয়র চিকিৎসকের অভাবে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে গিয়ে দুর্ভোগ ও হয়রানির মুখে পড়েন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কলেজ ও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে অতিরিক্ত সিনিয়র চিকিৎসককে বহির্বিভাগে এনে পরিষেবা স্বাভাবিক করেন।
বহির্বিভাগের ফার্মাসিস্ট বীরেন রায় জানিয়েছেন, স্বাভাবিক নিয়মে বহির্বিভাগের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ বিভাগে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসক মিলিয়ে তিন থেকে চার জন করে চিকিৎসক রোগীদের দেখেন। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে, বহির্বিভাগের প্রতিটি বিশেষজ্ঞ বিভাগে এক জন করে সিনিয়র চিকিৎসক রোগীদের দেখছেন। বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা পেতে দেরি হচ্ছে। বীরেন এ দিন বলেন, “শুক্রবার দু’জন মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসককে অন্য বিভাগ থেকে জরুরি ভিত্তিতে বহির্বিভাগে এনে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার কাজে গতি বাড়ানো হয়।”
এ দিন জ্বর ও পেটের সমস্যা নিয়ে বহির্বিভাগে গিয়েছিলেন রায়গঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা মহম্মদ আলি। শারীরিক দুর্বলতার সমস্যা নিয়ে সেখানে যান রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি-১ পঞ্চায়েতের বোগ্রামের শকুন্তলা রায় বর্মণ। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসককে দেখানোর জন্য প্রচণ্ড ভিড়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে হয়রানি ও দুর্ভোগের মুখে পড়ে তাঁরা বাড়ি ফিরে যান। আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি ও তাঁদের নিরাপত্তার দাবিতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও অবস্থান-বিক্ষোভ এই দিনও অব্যাহত ছিল।
মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতির জেরে সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশকে দিনভর বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে রোগী দেখার পাশাপাশি, রোগীদের অস্ত্রোপচার ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের পড়াতে হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে সিনিয়র চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বহির্বিভাগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিনিয়র চিকিৎসকরা এক যোগে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায়ের বক্তব্য, “সিনিয়র চিকিৎসকেরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে মেডিক্যাল কলেজে রোগীদের যতটা বেশি সম্ভব চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন।”