ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই প্রাথমিক স্কুলের চাকরি নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, স্পষ্ট ভাবে ২০১৪ সালের প্রাথমিক নিয়োগ এবং ২০১০ সালের পরবর্তীকালের চাকরি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। শাসক বা বিরোধী দলের কোন কোন নেতার আত্মীয়, পরিচিতরা প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছেন, কারাই বা তৃণমূলে নাম লেখানোর দৌলতে নিয়োগের তালিকায় নাম তুলেছেন তা দেখা হচ্ছে। কারা নিজেরা চাকরি না নিলেও অনেকের ‘ব্যবস্থা’ করে দিয়েছেন তাও দেখা শুরু হয়েছে। এর বাইরে দলের মন্ত্রী, নেতানেত্রীরা ছাড়া জেলার কারা সরাসরি পার্থ’র ঘর অবধি পৌঁছতে পারতেন জানার চেষ্টা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থার এক সহ অধিকর্তা পদমর্যাদার অফিসার বলেন, ‘‘এখনও যা মিলেছে তা পাহাড়ের মাথাটা দেখা গিয়েছে মনে হচ্ছে। গোটা পাহাড়টাই বাকি রয়েছে। আশা করা যায়, ধাপে ধাপে সব সামনে আসবে।’’
কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে ২০১৭ সাল অবধি পার্থ নিয়মিত আসতেন। এক দফায় তিনি কার্শিয়াঙের চা বাগানের বাংলোয় এসে ক’দিন ছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে কারা এসেছিলেন মন্ত্রীর সঙ্গে, সব এখন কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি'র নজরে। নিছকই সময় কাটাতে, না কি দলের কাজে পার্থ উত্তরবঙ্গে কাউকে নিয়ে এসে বসেছিলেন তা গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন।
চাকরি বা পোস্টিং দেওয়ার ক্ষেত্রে এক শিক্ষকের নাম বাজারে শোনা গিয়েছে। সত্যিই তিনি কতটা জড়িত তা দেখা হচ্ছে। তেমনিই, শিলিগুড়ির এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর নাম জানা গিয়েছে। তিনি বরাবর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলেই তৃণমূল মহলে চাউর রয়েছে। অভিযোগ, এর বাইরেও শিক্ষা দফতরের কোনও অফিসার বা কর্মী কোনও বেআইনি কাজে ছিলেন কি না তা খোঁজখবর করা হচ্ছে।
শিক্ষকদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, শাসকদের ছোট থেকে মেজো ও বড় নেতাদের পরিচিত, আত্মীয় অনেকে গত এক দশকে প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছেন। কয়েকজন হাইস্কুলে পেয়েছেন বলেও খোঁজ রয়েছে। সব ক্ষেত্রে নিয়ম ও যোগ্যতা মেনে সব হয়েছে কি তা দেখা দরকার। আর সব বিষয়গুলি যখন সামনে আসছে, তখন তা আরও প্রাসঙ্গিক। কয়েকজন শিক্ষকের কথায়, শিক্ষকদের চাকরিই শুধু নয়— পোস্টিং, আদালতের নির্দেশে চাকরি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ শোনা যায়। সেখানে এক শিক্ষক ছাড়াও দুই ব্যবসায়ীর কথা উঠে আসছে। এঁদের মাধ্যমেই লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ। এক ব্যবসায়ী নিজে চাকরি না নিলেও অন্যদের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওই শিক্ষকদের। গত দু’দিনে অবশ্য তৃণমূলের অন্দরে নানা আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। নিয়মিত ফোন করে নেতারা কোথায় কী হচ্ছে খোঁজখবর শুরু করেছেন।