শিকলে বন্দি পা। নিজস্ব চিত্র।
মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে নিয়ে বিপাকে অসহায় পরিবার। ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে ঘর তালা বন্ধ করে রাখছেন বাবা-মা। এমনই অমানবিক চিত্র রায়গঞ্জ ব্লকের ১২ নম্বর বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শীজগ্রামে। ঘটনা নিয়ে সমাজকর্মীরা সরব হতেই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রশাসনের।
রায়গঞ্জের শীজগ্রামের বাসিন্দা খোকন রায়। তাঁর ছেলে বাপির রায়ের বয়স এখন ২২ বছর। এখন বাপির দিন কাটছে ঘরে তালাবন্দি থেকে। কিন্তু ছোট থেকে লেখাপড়ায় বাকি মতোই ছিলেন তিনি। কিন্তু প্রায় বছর ১০ আগে আচমকাই ভারসাম্য হারায় সে। উলঙ্গ হয়ে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি, চলে যেত এখানে সেখানে। গ্রামবাসীদের রোষের আশঙ্কায় তাই পায়ে শেকল বেঁধে বাপিকে আটকে রাখেন তাঁর বাবা-মা।
বাপির টিকিৎসা করাতে ভিটেমাটিও বিক্রি করেছেন খোকন। কিন্তু ছেলের মানসিক পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। এ নিয়ে বাপির মা পুতুল রায় বলেছেন, ‘‘চোখে চোখে রাখতে হয়। মা হয়েও ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখি। খুব কষ্ট হয়।’’ খোকন বলেছেন, ‘‘ছেলের চিকিৎসা করাতে ভিটেমাটি বিক্রি করেছি। সাইকেল সারাইয়ের কাজ করতাম। কিন্তু এখন লকডাউনের জন্য সব বন্ধ। অগত্যা অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করি। ছেলের চিকিৎসা আর করাতে পারছি না।’’
বিষয়টি নিয়ে সমাজকর্মী কৌশিক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘আজকের দিনে এ ভাবে একজন মানুষকে বেঁধে রাখাটা সত্যিই অমানবিক। সঠিকভাবে সঠিক চিকিৎসা হয়তো ওনারা করাতে পারেননি। এই ধরনের রোগী দেখলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উচিত তাঁদের পাশে দাঁড়ানো।’’ ক্যামেরার সামনে এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি রায়গঞ্জের যুগ্ম বিডিও তনয় লাহা। তবে খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।