প্রতীকী ছবি।
মালদহের মানিকচক ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত চলতি আর্থিক বছর ২০২২-২৩ এ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ‘টায়েড’ ও ‘আনটায়েড’ খাতে এখনও ৬২ শতাংশ অর্থ খরচই করতে পারেনি। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ৩৮ শতাংশ। আর পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে সেই খরচ ৫২ শতাংশ। চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে হাতে আর মাত্র আড়াই মাস সময় রয়েছে। এ দিকে, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে, নির্বাচন আচরণ বিধির জেরে নতুন করে কোনও উন্নয়ন কাজ শুরু করা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে এই সময়ে বাকি কাজ শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিগত ন’মাসে কেন টাকা খরচ করা যায়নি তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বকেয়া টাকার কাজ দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মানিকচক ব্লকের বিডিও শ্যামল মণ্ডলকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। মেসেজ পাঠালেও উত্তর মেলেনি। তবে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘টেন্ডার-সহ বিভিন্ন কারণে পঞ্চায়েত সমিতিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে দেরি হয়েছে। তবে বাকি অর্থের কাজ দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে আমরা তৎপর হয়েছি। আগামী সপ্তাহেই টেন্ডার করে কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে জেলার মানিকচক ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ‘টায়েড’ ও ‘আনটায়েড’ তহবিল মিলিয়ে কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তরফে মোট ২১ কোটি ২৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৮৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পঞ্চায়েতগুলি মাত্র আট কোটি আট লক্ষ ১৭ হাজার ৩০২ টাকা খরচ করতে পেরেছে। বাকি ১৩ কোটি ২০ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮৬ টাকা এখন পর্যন্ত ওই দুই তহবিলের নির্ধারিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে খরচই করতে পারেনি। এর মধ্যে মানিকচক পঞ্চায়েতের অর্থ খরচ করার হাল কার্যত শোচনীয়।
একই ভাবে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতি এই কমিশনের তরফে অর্থ পেয়েছিল চার কোটি ৬৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ৬৩২ টাকা। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দু’কোটি ৪৩ লক্ষ ১৮ হাজার ৯০৩ টাকা খরচ করতে পেরেছে। বাকি দু’কোটি ২২ লক্ষ ১৪ হাজার ৭২৮ টাকা খরচ না হয়ে পড়ে আছে। জানা গিয়েছে, মানিকচক ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতে এখনও অনেক রাস্তা কাঁচা পড়ে আছে, নিকাশি থেকে শুরু করে শৌচাগার তৈরির মতো কাজও অনেক বাকি আছে। অথচ, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থে সেই কাজ না করে টাকা ফেলে রাখায় প্রশ্নের মুখে পঞ্চায়েতগুলির পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতিও।