প্যাঙ্গোলিন পাচারের সময় হাতেনাতে ধৃত তৃণমূল নেতা। — নিজস্ব চিত্র।
প্যাঙ্গোলিন পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন উত্তরবঙ্গের এক তৃণমূল নেতা। এ বার তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। পাল্টা বেআইনি কাজ বরদাস্ত না করার বার্তা তৃণমূলের।
আলিপুদুয়ার জেলায় তৃণমূল পরিচালিত খোয়ারডাঙ্গা- ২ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জেমস বোরোগাঁওকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বন্যপ্রাণ পাচার করতেন তিনি। প্রসঙ্গত, শুক্রবার পাচারের আগেই জীবন্ত প্যাঙ্গোলিন-সহ জেমস বোরোগাঁওকে বনদফতর গ্ৰেফতার করে।
শুক্রবার বন দফতর গোপন সূত্রে খবর পায় একটি প্যাঙ্গোলিনের হাতবদল হতে চলেছে। তার পরেই ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর পূর্ব রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জের অন্তর্গত নিমতি রেঞ্জে জেমসকে একটি প্যাঙ্গোলিন-সহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন বনকর্মীরা। বন দফতর সূত্রে খবর, অসম থেকে প্যাঙ্গোলিনটি আলিপুরদুয়ারে আনা হয়েছিল একটি নম্বর প্লেটবিহীন বাইকে। সেই বাইকটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃত তৃণমূল নেতা জেমসকে শনিবার আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এ দিকে, এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিজেপির কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোক ওরাওঁ বলেন, ‘‘বালি চুরি, ত্রিপল চুরি, আবাসের টাকা চুরি— যে দলের নীতিই হল চুরি করা তারা এ বার বন্যপ্রাণ চুরিতে হাত দিয়েছে। গ্রামবাংলার মা, বোনেরা সাবধান থাকবেন, গরু, ছাগল, মুরগি কিছুই আর সুরক্ষিত নয়। তৃণমূল দলের টপ টু বটম (মাথা থেকে পা পর্যন্ত) চোর।’’ এর পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক্বরাইক বলেন, ‘‘দল বেআইনি কার্যকলাপ বরদাস্ত করে না। তাই বন্যপ্রাণী পাচারের অভিযোগে আমাদের দলেরই একজন গ্রেফতার হয়েছেন। সমাজবিরোধী কাজকর্ম করলে দলে থাকা যাবে না। দল কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে বলেই গ্রেফতার।’’ এতে কি দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়বে না? এই প্রশ্নের জবাবে প্রকাশ বলেন, ‘‘এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। দল তাঁকে বলেনি প্যাঙ্গোলিন পাচার করতে। দলের লোক গ্রেফতার হয়েছে এর অর্থ হল তৃণমূল বেআইনি কাজকর্ম কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না। মানুষ দেখছেন, তৃণমূল অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে না। এতে দলের ভালই হবে।’’