মেডিক্যালের আইডি। নিজস্ব চিত্র
দিন দশেক আগে সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছেন ডালখোলার বাড়িতে। তারপর থেকেই সর্দি, জ্বরে ভুগছিলেন ওই ব্যক্তি। এর মধ্যে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত ওই ব্যক্তি নিজেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এলে তাঁকে ভর্তি করা হয় আইসোলেশন ওয়ার্ডে (আইডি)। শুক্রবারের ঘটনা।
বছর পয়ত্রিশের ওই ব্যক্তি মহম্মদ সফিকুর রহমানের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায় বাজারগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েত-১ এলাকার পূর্বপ্রসাদপুরে। তাঁর উপসর্গের সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কোনও ব্যাপার রয়েছে কি না জানতে সোয়াব পরীক্ষা করানো হবে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে বলে জানান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক দাস বলেন, ‘‘ওই যুবক নিজেই এসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সিঙ্গাপুরে গবেষণার কাজ করেন। সেই কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে তাঁর সর্দি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখে আইডিতে রাখা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য তাঁর এই উপসর্গ এমন ভাবার এখনই কোনও কারণ নেই।’’ এ দিন ভর্তির পরে বিধি মেনে মাস্ক, এবং পার্সোনাল প্রটেকটেড ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পোশাক করে তাঁকে দেখে এসেছেন নার্সরা। সুপারের দাবি, তাঁকে নজরে রাখা হয়েছে। তবে তিনি কোনও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে ছিলেন না।
সফিকুরের দাদা নীহার আলম বলেন, ‘‘বছর তিনেক ধরে সিঙ্গাপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন নিয়ে গবেষণায় যুক্ত সফিকুর। মাস চারেক আগে একবার এসেছিল। এবার ১০ দিন আগে বাড়ি ফেরে ভাই।’’ বিমানে কলকাতায় নেমে সেখান থেকে ট্রেনে কিসানগঞ্জে এসেছিলেন সফিকুর। বাড়িতে ফেরার পরে জ্বর, সর্দি, মাথাব্যাথা শুরু হয়। দাদার পরামর্শে গত মঙ্গলবার রায়গঞ্জ মেডিক্যালের বহির্বিভাগে যান। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। বুধবার মেডিক্যালের বহির্বিভাগে দেখিয়েছিলেন। শুক্রবার চিকিৎসক তাঁকে ফের আসতে বলেছিলেন। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় এ দিন ভোরে তাঁকে নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রওনা হন বাড়ির লোকেরা। বহির্বিভাগে দেখানোর পরে তাঁকে মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক সব শুনে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করান।
এই পরিস্থিতির মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আইডি’তে কাজ করা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের দাবি, চিকিৎসক ও নার্সরা মাস্ক, বিশেষ পোশাক করে কাজ করছেন। অথচ ওই ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সেগুলি দেওয়া হচ্ছে না। তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।