নিহত ইত্তেকার শেখ। — নিজস্ব চিত্র।
কাজের খোঁজে নিজের গ্রাম ছেড়ে মুম্বইয়ে পা রেখেছিলেন মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু তার দিন দশেকের মাথায় খুন হতে হল তাঁকে। ওই কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে নিহত যুবকের এক বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ধৃতকে। ওই হত্যাকাণ্ডের পিছনে আর কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নিহত যুবকের দেহ পৌঁছয় তাঁর মালদহের বাড়িতে।
মালদহের মোথাবাড়ি থানার উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাহালা গ্রামের বাসিন্দা ইত্তেকার শেখ (২০)। গত ৮ সেপ্টেম্বর তিনি গ্রামেরই এক দল যুবকের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছিলেন ইত্তেকার। কিন্তু গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাঁর পরিবারের লোকজন খবর পান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইত্তেকারের গলা কেটে খুন করা হয়েছে। এই খবরে শোকস্তব্ধ ইত্তেকারের পরিবার। ওই ঘটনায় আসিফ আবদুল (২০) নামে ইত্তেকারেরই এক বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনিও কাহালা এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার সকালে মুম্বই থেকে বিমানে করে ইত্তেকারের দেহ আনা হয় কলকাতা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সড়কপথে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বৃহস্পতিবার কাহালায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দেহ। কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ইত্তেকারের স্ত্রী শবনম বিবির কথায়, ‘‘গত ৮ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে মুম্বই গিয়েছিল ও। যে ওকে খুন করেছে তার সঙ্গে ওর ভালই সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওর মতো এক জন ভাল ছেলেকে কেন খুন করা হল তা জানি না। আমার সঙ্গে ওর ফোনে শেষবার কথা হয়েছিল গত ১৭ সেপ্টেম্বর। এর পর আমার এক আত্মীয়ের মোবাইলে ওর মৃতদেহের ছবি পাঠানো হয়। যে ওকে খুন করেছে আমরা তার শাস্তি চাই।’’
আসিম আক্রম নামে ইত্তেকারের এক প্রতিবেশীর বক্তব্য, ‘‘ওই ছেলেটি সাধারণ পরিবারের। ওরা তিন ভাই। কিছু দিন আগে ওদের বাবা মারা গিয়েছেন। এর পর ছোট ছেলেটি মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়েছিল দিন ১০-১২ আগে। কিন্তু সেখানে গিয়ে ওর পরিণতি এমন হবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবা যায়নি।’’
মুম্বই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে অভিযুক্ত আসিফকে। ওই ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের দাদা আশিক ইকবালের কথায়, ‘‘তদন্তে যে ধরা পড়েছে তার সঙ্গেই ও মুম্বই গিয়েছিল। ওরা তো বন্ধুবান্ধবই ছিল। তাও ওকে কেন খুন করল জানি না। এর পিছনে আরও লোকজন আছে। আমি চাই, ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’’