প্রচার: পাচার রুখতে মালদহের বাংলাদেশ সীমান্তে ১৪৪ ধারা জারি নিয়ে ষষানি গ্রামে মাইকে বিএসএফের তরফে সচেতনতা প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
মালদহ জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে গরু, কাফ সিরাপ সহ নানা সামগ্রীর পাচার মারাত্মক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফ ও পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলার সীমান্ত এলাকায় অগস্ট মাসের শেষ থেকে এই আইন কার্যকর করা হয়েছে। তবে প্রশাসন পাচারের অজুহাত দিয়ে সীমান্তে ১৪৪ ধারা লাগু করলেও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপ ও নাশকতামূলক কারবার ঠেকাতেও এই আইন কার্যকর করা হতে পারে। মালদহ থেকে দু’জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে সম্প্রতি গ্রেফতারের পরেই এই সিদ্ধান্তে জোর দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন নির্দেশ জারি করেছে, মালদহ জেলার বাংলাদেশ সীমান্তের বৈষ্ণবনগর, কালিয়াচক ও বামনগোলা থানা এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে ও হবিবপুর থানা এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে সন্ধে ছ’টা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। এই সময়কালে ওই নির্দিষ্ট এলাকাগুলিতে গরু সহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বহন করা ও এক সঙ্গে চার জন মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী প্রায় দুই মাসের জন্য এই আইন বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে লাগু থাকবে বলে খবর।
এই ১৪৪ ধারা জারি করার বিষয়টি নিয়ে সীমান্তবাসীদের সতর্ক করতে মালদহ জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে জোরদার সচেতনতার প্রচারও শুরু করেছে বিএসএফ। বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্ত জুড়ে থাকা কাঁটাতারের বেড়ায় ওই নির্দেশিকা সংক্রান্ত ছোট ছোট হোর্ডিং ঝোলানো হয়েছে। পাশাপাশি ই-রিকশা করে মাইকে জোর প্রচার চালান হচ্ছে সীমান্তের গ্রামগুলিতে। তবে অভিযোগ, বিএসএফের টহলদারি ও ১৪৪ ধারা জারি করেও বাংলাদেশ সীমান্ত পথে পাচার কিন্তু ঠেকানো যাচ্ছে না।
মালদহের কালিয়াচক-৩ ব্লকের শোভাপুর গ্রাম থেকে বামনগোলা ব্লকের মাধোবতি গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এর মধ্যে নদী ও জমির জটের কারণে সীমান্তের প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া যায়নি। অভিযোগ, নদীপথ ও কাঁটাতার বিহীন এলাকা দিয়ে দেদার পাচার চলছে।
তিন দিন আগে মালদহের সামসি স্টেশন থেকে দুই সন্দেহ ভাজন জেএমবি জঙ্গি আব্দুল বারি ও নিজামুদ্দিন খানকে এসটিএফ গ্রেফতার করায় মালদহে জেএমবি যোগাযোগ নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্দেহজনক এলাকা হিসেবে মালদহের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাতেই খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে।