সঙ্গে: মঞ্চে তখন বক্তৃতা দিচ্ছেন অনীত থাপা। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় শাসক দলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা তৃণমূল নেত্রীর পাশে থেকেই কাজ করে যাওয়ার বার্তা দিলেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের এবং মুখ্যমন্ত্রীর যৌথ প্রচেষ্টার ফলেই পাহাড় শান্ত হয়েছে বলে জানিয়ে মঞ্চে ‘জয় গোর্খা’র সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আজীবন কাজ করার ঘোষণাও করে দিলেন অনীত। আর মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দিলেন, পাহাড়ে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করছেন। একসঙ্গে লড়াই করেছেন। অনীতেরা জিটিএ-র ক্ষমতায় এসেছেন। তৃণমূলও ভালও ফল করেছে পাহাড়ে। এই শান্তি এবং সমৃদ্ধির পরিবেশ পাহাড়ে বজায় রেখে যেতে হবে।
অনীতের তৃণমূলের মঞ্চে যাওয়া নিয়ে দার্জিলিং পাহাড়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। জনমুক্তি মোর্চার তরফে রোশন গিরিরা এক দফায় ওই মঞ্চে অবশ্য গিয়েছিলেন। তবে বিমল গুরুং বা অন্য নেতারা নয়। আর এ দিন অনীতকে মঞ্চের প্রথম সারিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে বসিয়ে তৃণমূল বুঝিয়ে দিয়েছে, পাহাড়ে অনীতের হাত শক্ত করতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্ব সব সময় প্রস্তুত। আবার অনীত ‘জয় বাংলা’ বলায় পাহাড়ের নেতারা নানা আলোচনা করছেন।
আড়ালে অনেকে বলছেন, ‘‘অনীত তৃণমূলের বি-টিমে পরিণত হয়েছেন। তৃণমূল পাহাড়ে সরাসরি যা করতে পারেনি তা অনীতকে দিয়ে করাচ্ছেন।’’
অনীত অবশ্য এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন। আজ, শুক্রবার সকালে কলকাতায় নবান্নে তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। জিটিএ-র আগামী কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হবে। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়ের সঙ্গে বৈঠক করে পানীয় জলের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন। অনীত বলেন, ‘‘আমরা বাংলায় আছি। বাংলার সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই আমাদের কাজ করতে হবে। এতে পাহাড়ের উন্নয়ন হবে। বাকি আমাদের দাবিদাওয়ার প্রক্রিয়া রয়েছে, তা মেনেই সব সময়মতো হবে।’’
এ দিন ধর্মতলার মঞ্চে সংক্ষিপ্ত ভাষণও দেন অনীত। তিনি জানান, ১৯৮৬ সাল থেকে পাহাড় ধ্বংসাত্মক রাজনীতি হয়েছে। দাবিদাওয়া, আন্দোলনের নামে পাহাড়ের ক্ষতি করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরের প্রচেষ্টায় তা থামানো গিয়েছে। এটাকে জারি রাখতে হবে। এর পরেই বড় ঘোষণা করে দেন অনীত। তিনি বলেন, ‘‘আমি যতদিন রাজনীতি করব ততদিন তৃণমূল নেত্রীর অনুপ্রেরণায় তা করব।’’
সমাবেশে পাহাড়ের তৃণমূল নেতৃত্বও ছিলেন। দু’দিন ধরে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মীদের কলকাতা নিয়ে যুবভারতীতে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাঁদের জন্য মাংস, ভাতের বন্দোবস্ত ছিল। যা নিয়ে পাহাড়ের নেতারা বলেছেন, ২১ জুলাই মানেই ডিম-ভাত বলা হয়। কিন্তু পাহাড়কে শাসক দল আলাদা মর্যাদা দেয়, তা খাবারের মেনুতেই পরিষ্কার। সবজি, ডাল, মুরগির মাংসের ঝোল কিছুই বাদ রাখা হয়নি।