অসহায়: দরমা আর প্লাস্টিকের তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন কুমুদিনী রায়। ছবি: সুমন মণ্ডল
নিজের বয়স্ক মাকে মারধর করে বাড়িঘর ভেঙে দিয়ে, জায়গাজমি অন্যের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলে এবং তাঁর বউয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ছেলে এবং তাঁর স্ত্রী পলাতক।
দিনহাটা শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরটারি এলাকায় বয়স্ক ওই মহিলার নাম কুমুদিনী রায়। অভিযোগ উঠেছে ছেলে যোগেশ রায় ও পুত্রবধূ আকালি রায়-সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। বৃদ্ধা অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে কয়েকজনকে নিয়ে দিনকয়েক আগে তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গালিগালাজ ও মারধর করে। ঘর ভেঙ্গে দিয়ে জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেয়। তারপর অসমের এক ব্যক্তির কাছে সেই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বৃদ্ধা কুমুদিনী রায় সব জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামীর পৈতৃক ভিটায় থাকার ঘরটি ছেলে পরিচিত কয়েকজনকে নিয়ে এসে ভেঙ্গে দেয়। তিনি পুলিশের আশ্বাসে দরমা আর প্লাস্টিকের তাঁবুতে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন। কুমুদিনীদেবী বলেন, তিনি তাঁর স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। তাঁর ছেলে যোগেশ ও ছেলের বউ মিলে তাঁকে মারধোর করা ছাড়াও, জোর করে সই করে অসমের এক ব্যক্তির কাছে ওই জায়গা বিক্রি করে দেন। তার অন্য ছেলে মেয়ে, কারও কোনও সই না নিয়ে ওই জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
৮৫ ছুঁই ছুঁই ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘পুলিশকে সব কথা জানালে, তাদের আশ্বাসের পর এই জমিতেই প্লাস্টিক বিছিয়ে দিন কাটাচ্ছি।’’ কুমুদিনীদেবীর মেয়ে গীতা রায় ভিন রাজ্যে থাকেন। তিনি জানান, বাড়িতে ফিরে পরে, মায়ের কাছ থেকে এই সব কথা জানতে পারেন। শিবুলাল নামে অসমের যে ব্যক্তি বৃদ্ধার জমি, বাড়ি কিনেছেন, তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিলেন গীতাদেবী ও তাঁর মা। শিবুলাল আলফা দিয়ে তাঁদেরকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভয় দেখান বলে অভিযোগ করেন গীতাদেবী।
এদিকে অভিযুক্ত ছেলেকে খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ। দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘‘ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্ত ছেলে আর তাঁর স্ত্রীকে খুঁজছে পুলিশ।’’ বর্তমানে সে পলাতক বলে দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত জানান ।