বিনা পয়সার ফর্মের দাম এখন ৫০০ টাকা

গত ৩১ অগস্ট অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আর তারপর থেকেই অসম সীমানা লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলাতে এনআরসি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন নথি সঠিক রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে নানা সরকারি দফতরের ছুটতে শুরু করেন বাসিন্দাদের অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

জোট-বেঁধে: এনআরসি-র ভয়ে রাত জেগে কাজ ফেলে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ। উপরে আলিপুরদুয়ার, নীচে ময়নাগুড়িতে তোলা ছবি। নিজস্ব চিত্র। 

লাইন যত লম্বা হচ্ছে, দামও যেন ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অভিযোগ, বিনা পয়সার ফর্মের দাম কখনও উঠছে ২০০টাকা, কখনও ৫০০ টাকাও। রেশন কার্ড তৈরি ও সংশোধনীর কাজে আলিপুরদুয়ারে এ ভাবেই দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, কাজ ফেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর ঝঞ্ঝাট এড়াতে এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত বাসিন্দাদের অনেকেই সব জেনেবুঝে দালালদের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন।

Advertisement

গত ৩১ অগস্ট অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আর তারপর থেকেই অসম সীমানা লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলাতে এনআরসি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন নথি সঠিক রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে নানা সরকারি দফতরের ছুটতে শুরু করেন বাসিন্দাদের অনেকেই। এরই মধ্যে রেশন কার্ড তৈরি ও সংশোধনীর কাজেও বাসিন্দাদের হিড়িক পড়তে শুরু করে। এনআরসি ভয়ে প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন বিডিও অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন। নতুন ভোটার কার্ড তৈরি কিংবা সংশোধনের ফর্ম তুলতে লাইন পড়ে যাচ্ছে সাত সকালেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম তুলে তা পূরণ ও যাচাই করার পরে ফের ফর্ম জমা দিতে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে তাদের। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বিভিন্ন বিডিও অফিসে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ।

অভিযোগ, বিভিন্ন বিডিও অফিসে মানুষের ভিড়েই মিশে থাকছেন দালাল চক্রের সদস্যরা। যাঁদের হাতে থাকছে ফর্ম। লাইনে ভিড় একটু কম থাকলে দু’শো টাকাতেই মিলে যাচ্ছে সেই ফর্ম। কিন্তু লাইনে ভিড় হলেই ফর্মের দাম পাঁচশো টাকা পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বড় শালকুমারের এক বাসিন্দার অভিযোগ, তাঁরা আতঙ্কে দ্রুত রেশন কার্ড তৈরি করতে চাইছেন। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একদল মানুষ তাঁদের মতো গরিব মানুষের থেকে যে ভাবে পারছে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফর্ম জমা দেওয়ার বেলাতেও অনেক ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটছে। যদিও আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য কোনও অভিযোগ মানতে রাজি নন। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, ‘‘এগুলি হওয়ার প্রশ্নই নেই। জেলার প্রতিটি বিডিও দফতরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বারবার মাইকে ঘোষণা করে রেশন কার্ডের সমস্যা নিয়ে আসা বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। আমি নিজেও একাধিক বিডিও অফিসে গিয়েছি। কেউ আমার কাছেও এমন অভিযোগ করেননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement