ফাইল চিত্র
লকডাউনের সময় রেলের ঠিকা শ্রমিক ও কর্মীদের সকলের একই সময়ে কাজ করার প্রয়োজন নাও হতে পারে। কাজ না করলেও ঠিকাদারের মাধ্যমে তাঁদের রোজের টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। কিন্তু গত দেড় মাস ধরে টয় ট্রেনের ঠিকা শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ওই শ্রমিকদের একাংশের দাবি, তাঁদের রেশন কার্ড নেই, ত্রাণ নিতে গেলে বলা হচ্ছে তাঁরা রেলের কর্মচারী হয়ে কেন ত্রাণ চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে ওই শ্রমিকরা মোর্চা নেতা বিনয় তামাংয়ের হস্তক্ষেপের দাবি জানাবেন। যদি রেলের দাবি, এরকম হওয়ার কথা নয়।
লকডাউন শুরুর পর কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছিল, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির যেসব শ্রমিক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করেন, তাঁদের মজুরি যাতে না আটকায় তা জন্য ঠিকাদারদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কাজ হোক বা না হোক ওই নিয়ম চলবে। কিন্তু দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের (ডিএইচআর) ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। টয় ট্রেনের একাধিক শ্রমিক মাইনে পাননি দু’মাস হতে চলল। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের কয়লা শ্রমিক মানু রাই বলেন, ‘‘আমাদের যৌথ পরিবারে অনেকগুলি সদস্য। বাকিরাও যে কাজ করতেন, তা বন্ধ। রেশন কার্ড নেই। ত্রাণের লাইনে দাঁড়ালেই রেলের কর্মী বলে আর ত্রাণ দিচ্ছে না কেউ। অসুবিধায় পড়েছি।’’ দার্জিলিঙে এরকম ১১ জন শ্রমিক রয়েছেন। কার্শিয়াং, তিনধারিয়া, শিলিগুড়ি মিলিয়ে আরও জনা কুড়ি। সকলেরই একই অবস্থা।
কেন হচ্ছে না মাইনে? ওই শ্রমিকদের ঠিকাদার অনিমেষ দাস বলেন, ‘‘রেলের তরফে টাকা পাইনি। নিজে থেকে মার্চের ১৫ দিন পর্যন্ত টাকা দিয়ে তারপর আর দিতে পারিনি। দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরে উপরমহলে কথা বলে দেখতে বলা হয়েছে। লকডাউনের সময় দৌড়ঝাঁপ করা মুশকিল।’’ ঠিকাদার সংস্থার মালিকের দাবি, তিনি অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থাতেও শ্রমিক সরবরাহের ঠিকা নিয়েছেন। সকলেই উপস্থিতি শিটের উপর ‘বাড়ি থেকে কাজ’ লিখে দেওয়ার পর সেইসব শ্রমিকদের মাইনে দিয়েছেন। কিন্তু টয় ট্রেনের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ডিএইচআর কর্তারা কিছু বলতে চাননি এসব নিয়ে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘এরকম জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। আলাদা করে কোনও চিঠি তো ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়ার কথা নেই। এমনিতেই টাকা পাওয়ার কথা শ্রমিকদের । খতিয়ে দেখছি।’’