র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠার পরে দু’দিন কেটে গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ না করায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার স্কুল অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা।
মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির কয়েক জন ছাত্রের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রকে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রটি স্কুলে পরীক্ষায় প্রথম হয়। সে চুরি করেছে বলে অভিযোগ তুলে ঘরে আটকে মারধর করা হয়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ৬ মাস আগে একই রকম র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিল গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা দশম শ্রেণির এক ছাত্রও। এ দিন তার মা মুক্তারুল মন্ডল অভিযোগ করেন, ‘‘সে সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। ফলে অভিযুক্ত একদশ শ্রেণীর ছাত্ররা হস্টেলের নিচু শ্রেণির ছাত্রদের উপর অত্যাচার চালানোর সুযোগ পাচ্ছে।’’
এ বারের ঘটনায় দশম শ্রেণির ওই ছাত্র বুধবার সকালে হস্টেলের এক শিক্ষকের কাছে মোবাইল চেয়ে বাড়িতে ফোন করে অত্যাচারের কথা জানায়। এরপর তাকে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাতে হয়।
ওই বিদ্যালয়ে গত ১২-২৮ মার্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন র্যাগিংয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিত ছাত্রের বাবা ও মা। নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বি কে সিংহ বিষয়টি নিয়ে প্রথমে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। পরে তিনি অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
হিলি থানার লস্করপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বালুরঘাটের জওহর নবোদয় আবাসিক স্কুলে থেকে পড়াশোনা করছে। এ দিন ছাত্রটি জানিয়েছে, গত রবিবার নবম শ্রেণির পড়ুয়া তার মামাতো ভাই শাহিদ হোসেনের হস্টেল ভবনে দেখা করতে যায়। কিন্তু ঘরে কাউকে না দেখে ফিরে আসে। এরপর সোমবার রাতে একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্র তাকে ডেকে দাবি করে তাদের ঘর থেকে ৩০০ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। টাকাটি ওই ছাত্রই নিয়েছে বলে তারা চাপ দিতে থাকে। কারও কোনও টাকা সে নেয়নি বলে ছাত্রটি জানালেও সে কথা শুনতে রাজি হয়নি। এরপর তারা ওই ছাত্রের ঘরে তল্লাশিও করে। তখন কিছু না পেয়ে শাসিয়ে চলে যায়। মঙ্গলবার রাতে ফের তাকে সিনিয়রদের হস্টেলের ঘরে ঢুকিয়ে টাকা চুরির অভিযোগ তুলে চাপ দেওয়া হতে থাকে। টাকা চুরি করেছে বলে তাকে দিয়ে কাগজে জোর করে লিখে নেওয়া হয়। এরপর মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ।
অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু এখনও অবধি কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি অভিযোগ তুলে নিগৃত ছাত্রের বাবা, মা প্রয়োজনে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে জনিয়েছেন।