সতর্কতা: পুরো লকডাউন শহরে। তা সত্ত্বেও হুঁশ নেই। তাই বাধ্য হয়েই কোচবিহারে দোকান বন্ধ করতে বলছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন ঘোষণার নির্দেশ যখন কোচবিহারে পৌঁছল, রাত তখন ৯টা। সব গুছিয়ে মাইক বের করতে রাত আরও গভীর হয়ে যায়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও প্রচার করা হয়। ততক্ষণে কোচবিহারের মতো ছোট্ট শহরে বেশিরভাগ বাড়িতে বাতি নিভে গিয়েছে। গ্রামের লোকজন আরও আগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। বুধবারের সকাল থেকে তাই কোচবিহার ছিল নিজের ছন্দেই। বাজার বসেছে। দোকানপাটের একটি বড় অংশ ছিল খোলা। বাস-অটো-টোটো চলেছে। হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন নানা কাজে। বেলা ১২টার পরে অটো-টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। দুর্ভোগে পড়েন বহু মানুষ। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, পরিকল্পনাহীন লকডাউন কেন করা হচ্ছে? ব্যবসায়ীদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, কোচবিহারে শহর তো স্বাভাবিক রয়েছে। তা হলে এখানে কেন লকডাউন?
এ সবের মধ্যেই পথে নেমে পড়েন কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল। তিনি পথচলতি লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। লকডাউনের কথা জানিয়ে অনেককেই সতর্ক করেন। শুরু হয় মাইকে প্রচার। মহকুমাশাসক বলেন, “রাতে অনেকেই জানতে পারেননি। সকাল থেকে আমরা সবাইকে জানাতেই রাস্তায় নামি। দুপুরের পর শহর লকডাউন হয়ে যায়।” ব্যবসায়ীরা অবশ্য লকডাউনে খুশি নয়। কোচবিহার জেলা ব্যবসা সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “কোচবিহার শহরের রিপোর্ট তো খারাপ নয়। প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী শহরে বর্তমানে কোনও করোনা নেই। সেক্ষেত্রে লকডাউনের যে শিথিলতা ছিল তা থাকলেই ভাল হত!’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান সকাল ১১টা পর্যন্ত খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি দোকান বন্ধ থাকবে। টোটো-অটো চলাচল করবে না শহরে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি ও বেসরকারি বাস অবশ্য চলবে। এ দিন সেই তথ্য ছিল না বেশিরভাগ লোকজনের কাছেই। তাই সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের সামনে লাইন পড়ে যায়। নানা কাজে মানুষ চলে আসেন শহরে। নতুন বাজার, কলাবাগান বাজার থেকে শুরু করে ছোট-মাঝারি সব বাজারে ভিড় উপচে পড়ে। বেলা ১২টার পর থেকে নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়। টোটো-অটো বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্ভোগে পড়েন বহু মানুষ। বাসে গাদাগাদি করে ফেরেন অনেকেই। শহরের চিকিৎসক দেখাতে আসা জয়ন্তী বর্মণ বলেন, “অটো করে শহরে এসেছিলাম। ফেরার সময় গাড়ির জন্য অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।”