প্রতিবাদ: এনআরসির বিরুদ্ধে গণসমাবেশে সেলিম। নিজস্ব চিত্র
নাগরিক পঞ্জির নামে এ রাজ্যের এক জনকেও তারা বাংলাদেশে পাঠাতে দেবে না বলে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিল সিপিএম।
বৃহস্পতিবার এনআরসির বিরুদ্ধে ও কৃষকের ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে জেলা সিপিএমের ডাকে বালুরঘাটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিল সিপিএম। সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘দেশের নাগরিকত্ব বিজয়ার নারকেলের নাড়ু নয়, যে অমিত শাহেরা একজনের হাতে তুলে দেবেন, আর একজনকে দেবেন না।’’ তিনি অভিযোগ করেন, অসমে হিন্দু ও মুসলিমদের ভুল বুঝিয়ে আলাদা করে এনআরসি নামে যে অবিচার হয়েছে, এ রাজ্যে কোনও ভাবে তা হতে দেওয়া যাবে না। রাজ্যের হিন্দু ও মুসলিমদের একজোট হয়ে এনআরসির বিরুদ্ধে লড়তে হবে বলে তিনি জানান। অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে ২৬ জন আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ফসলের দাম না পেয়ে ঋণগ্রস্ত কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা তুলে ধরে সেলিম প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘একজন কৃষকও আত্মহত্যা করবেন না। বরং সকলে মিলে যাদের জন্য ওই দুরবস্থা তাদের কলার চেপে ধরুন।’’
সেলিমের কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ রাজ্যে বিজেপিকে ঠেকাতে পারছে না। ভাটপাড়া, বসিরহাট, বীরভূম, কোচবিহার ও মালদহ অশান্ত হয়ে উঠছে। বরং বিজেপির প্রেসক্রিপশন মেনে বিরোধীশূন্য করে রাজ্য চালাতে চাইছেন মমতা। সেলিমের দাবি, যে কাজ সরকারের করার কথা, সেই কাজ এখন মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহেরা। তাঁরা বুঝে গিয়েছেন, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কৃষকদের মধ্যেও এখন এনআরসি হাওয়া লাগিয়ে দেওয়া গিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির কথায় দেশ এগিয়েছে। তবে মায়েরা কেন অপুষ্টিতে ভুগছে? রক্ত দিতে হচ্ছে প্রসূতিকে। ১০০ জনের মধ্যে ৭২ জন মা কেন দুর্বল?’’ পলিটব্যুরোর সদস্য সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘আমার মা দুর্বল হবে। আর ভারত মাতা কী জয় হবে!’’
এনআরসির প্রতিবাদে এ দিন দুপুরে ইংরেজবাজার বিডিও অফিসের সামনেও অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করল বামফ্রন্ট। পরে ইংরেজবাজার ব্লক বামফ্রন্ট কমিটির তরফে বিডিওর কাছে ১২ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দিয়েছে। বামফ্রন্টের পক্ষে কৌশিক মিশ্র বলেন, ‘‘ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালি পঞ্চায়েতের টিপাজানি ধানতলা মোড় থেকে লক্ষীপুর পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে। অথচ তা সংস্কারে কোন উদ্যোগ প্রশাসন বা পঞ্চায়েতের নেই। অতিবৃষ্টির ফলে ইংরেজবাজার ব্লকের প্রচুর কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সেই কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি সহ নানা দাবি আমরা জানিয়েছি।"