Kali Puja

দীপাবলি হোক শুধুই আলোর, প্রচার শুরু

এ বার করোনা পরিস্থিতিতে এই বাজির সমস্যা আরও ভয়ঙ্কর আকার নেবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের বক্তব্য, শব্দ বা আলোর বাজির দূষণ করোনা আক্রান্তদের পক্ষে মারাত্মক হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৯
Share:

আলোর বাজার। কোচবিহারে।নিজস্ব চিত্র।

আশঙ্কাকে হারিয়ে আশার আলো দেখাতে দীপাবলিকেই অস্ত্র করতে চান পরিবেশপ্রেমীরা। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রচার, যেখানে এই দীপাবলিতে যে কোনও ধরনের বাজির উৎসব থেকে বিরত থাকতে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন রাখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ বারের উৎসব হোক শুধুই আলোর, শব্দের নয়।

Advertisement

জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। সে কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ, যাতে রেখেছেন পরিবেশপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ওই আবেদনে সাড়াও মিলছে প্রচুর। আর কয়েকদিন পরে কালীপুজো ও দীপাবলি। ওইদিন তো বটেই,আগেপরেও বাজি ফাটানো শুরু হয় কোচবিহারে। আতসবাজির সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে ফাটানো হয় নিষিদ্ধ শব্দবাজিও। পুলিশ-প্রশাসন মাঠে নেমেও খুব একটা কাজ হয় না। তার মধ্যে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। ওই সময়ে দূষণের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের অনেকেই জানান, বাজি উৎসবের পরে শ্বাসকষ্ট, চোখ ও কানের সমস্যা নিয়ে অনেকেই হাজির হন বহু মানুষ। রোগী বেড়ে যায় হৃদরোগ বিভাগেও।

এ বার করোনা পরিস্থিতিতে এই বাজির সমস্যা আরও ভয়ঙ্কর আকার নেবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের বক্তব্য, শব্দ বা আলোর বাজির দূষণ করোনা আক্রান্তদের পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল আচার্য বলেন, “এ বারে সবাইকে আলোর উৎসবে মেতে উঠতে হবে। বাজি একদম পোড়ানো ঠিক হবে না। কারণ তাতে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাবে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে।”

Advertisement

প্রশাসনের তরফ থেকে ওই বিষয়ে একটি সভা ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল। তিনি বলেন, “ওই বিষয়ে মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবাইকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।” পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রচারে নেমেছেন প্রাথমিক শিক্ষক নীলাদ্রী দেব। তিনি বলেন, “একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। এই সময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। তাই আমরা চাই এবারে আলোর উৎসব হোক, বাজির উৎসব নয়। দূষণহীন পরিবেশ রাখার চেষ্টা করি আমরা।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে মঙ্গলবার পর্য়ন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। অবশ্য সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন। এ বারে টানা সচেতনতা প্রচারে দুর্গাপুজোয় ভিড় অনেকটাই আটকাতে পেরেছে প্রশাসন। প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল, পুজোর পরে সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে যাবে। কিন্তু এখনও পর্য়ন্ত তা হয়নি। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা মনে করছেন, পুজোর ভিড় আটকে দেওয়ার কারণেই সংক্রমণ এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আছে। কালীপুজো ও দীপাবলিতে একই ভাবে সবাই সতর্ক না হলে বিপদ বাড়তে পারে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এবারে ভিড় যেমন এড়িয়ে চলতে হবে, তেমন ভাবেই বাজি নিয়ে সতর্ক হতে হবে সবাইকে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement