সরব: কোতোয়ালি ভবনের সামনে বিক্ষোভ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। ছবি: অভিজিৎ সাহা
সময় বদলায়, বদলায় দলের জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল বদলায় না মালদহে। সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী হয়ে মৌসম নুরের সময়ও সেই এক ছবি। ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে নতুন জট তৈরি হয়েছে, যার জেরে শনিবার দুপুরেও আদি তৃণমূলের লোকজন বিক্ষোভ দেখায় মৌসমের কোতোয়ালির বাড়ির সামনে। সেই অর্থে তৃণমূলে আসার পর এই প্রথম প্রকাশ্যে দলের বিরোধিতার মুখে পড়লেন উত্তর মালদহের প্রাক্তন সাংসদ মৌসম নূর। তিনি বলেন, “কমিটি নিয়ে সকলের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানো হবে।”
তিন দিন আগে তৃণমূলের ব্লক কমিটিগুলি ভেঙে দিয়ে নতুন করে অস্থায়ী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে জট। তৃণমূলের একাংশের দাবি, কমিটিতে আদিদের পরিবর্তে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নব্যদের বা মৌসম ঘনিষ্ঠদের। এরই জেরে শুক্রবার কোতোয়ালি ভবনে বিক্ষোভ দেখায় আদি তৃণমূলের একাংশ। এ দিন দুপুরেও কালিয়াচক-২ ব্লকের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা দলীয় কর্মীসমর্থকদের নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ দেখালেন কোতোয়ালি ভবনের সামনে। কোতোয়ালি ভবনের সিংহদুয়ারের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁরা।
কালিয়াচক-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস বলেন, “আমাদের ব্লকে ন’জনের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে ছ’জনই কংগ্রেসের। কারণ, খাতায় কলমে কেউ দলবদল করেনি। আর তাতে অসন্তুষ্ট দলের কর্মী, সমর্থকেরা।” ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মীরা বিবি বলেন, “কমিটিতে থাকা নেতারা লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছে। ভোটের সময় আমাদের গালাগালি করেছে। এখন তাদেরই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” কমিটি বদল না হলে পঞ্চায়েত সমিতি ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন টিঙ্কু, মীরারা। যদিও এ দিন বিক্ষোভের সময় কোতোয়ালি ভবনে ছিলেন না মৌসম।
কেন জেলায় মিটছে না তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল? তৃণমূল নেতাদের একাংশ জানিয়েছে, দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত পাঁচবার জেলা সভাপতি বদল করা হয়েছে। দুলাল সরকার, গৌতম চক্রবতী, কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, মোয়াজ্জেম হোসেন সভাপতি ছিলেন। এখন সভাপতি হয়েছেন মৌসম। জেলা সভাপতির মতো বদল হয়েছে ব্লক কমিটিও। আর প্রতিবারই অধিকাংশ ব্লক কমিটিতেই এসেছে নতুন মুখ। ফলে জেলায় বেড়েছে গোষ্ঠীর সংখ্যাও।
সাবিত্রী বলেন, “সোশ্যাল মাধ্যম থেকেই ব্লক কমিটির বিষয়টি জেনেছি। কমিটি নিয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি। তবে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো যায়।” মৌসম বলেন, “পূর্ণাঙ্গ ব্লক কমিটি এখনও তৈরি হয়নি। অঞ্চল কমিটি গঠনের জন্য প্রাথমিক ভাবে এই ব্লক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। দলের সকলকে মর্যদা দিয়ে কমিটি তৈরি করা হবে।”