নিশীথ প্রামাণিক। —ফাইল চিত্র।
ভোটের ফল নিয়ে এ বার উচ্চ আদালতে ‘ইলেকশন পিটিশন’ দায়ের করলেন বিজেপির কোচবিহার লোকসভা আসনের পরাজিত প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে ওই পিটিশন দাখিল করেছেন তিনি। বুধবার তিনি কলকাতা থেকে কোচবিহারে ফিরেছেন। নিশীথ জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটে কোচবিহারের ফল তিনি মানছেন না। কারণ, তাতে সন্দেহের জায়গা রয়েছে। নিশীথ বলেন, ‘‘বেশ কিছু বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা তা খতিয়ে দেখি। তাতে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসে। সে সব নিয়েই আদালতে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেছি।’’ খুব শীঘ্রই ওই মামলার শুনানি হতে চলেছে।
কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘ভোটে হেরে নিশীথ প্রামাণিকের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই এ সব করছেন। তিনি ভোটের পরে বলেছিলেন, শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে। গণনার পরে যখন হেরে গেলেন, তখন অন্য কথা বলছেন। আর সংবিধানে আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তিনি যেতেই পারেন। তা নিয়ে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই।’’
নিশীথ বিজেপির ‘ওজনদার’ প্রার্থী হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। সাংসদের পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সেই নিশীথ কোচবিহারে ভোটে জিতবেন তা প্রায় ধরে নিয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্বও। এমনকি, গণনার পরেও তিনি কত ভোটে জিতবেন তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে হিসাব-নিকাশ চলে। কিন্তু ভোট গণনার প্রায় প্রথম থেকেই ছিল উল্টো চিত্র। কোচবিহার আসনে ৩৯,২৫০ ভোটে বিজেপি প্রার্থী নিশীথকে হারিয়ে দেন তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ। নিশীথ অভিযোগ করেন, প্রায় শতাধিক বুথের ইভিএমের নম্বরের সঙ্গে ‘ফর্ম সেভেন্টিন সি’র নম্বর মিলছে না। তাঁর অভিযোগ, তা নিয়ে গণনা কেন্দ্রে তাঁদের কাউন্টিং এজেন্টদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করলে, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। সে ক্ষেত্রে ইভিএমে কারচুপি হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে কোচবিহার লোকসভার আট শতাংশ বুথে ছাপ্পা ভোট হয়েছে বলেও মনে করছেন নিশীথ।
তিনি দাবি করেন, ওই বুথগুলিতে সব মিলিয়ে তাঁর ভোট সংখ্যা ছয় হাজার। তৃণমূলের এক লক্ষের উপরে। সে সব নিয়ে ভোট গণনার দিন কয়েক পরেই আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন নিশীথ। তার পরেই কোচবিহারে এসেছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনিও একই অভিযোগ করে নিশীথকে আইনি পথে যাওয়ার পরামর্শ দেন।