—ফাইল চিত্র
নাম গোপন করে জাল নথি নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এনজেপিতে ধরা পড়ার পর থেকেই জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই নিয়ে উদ্বিগ্ন একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মঙ্গলবার এনজেপিতে ওই শরণার্থীরা ধরা পড়ার পরে তাদের এক দফা জেরা করে রেলপুলিশ, এবং রেল সুরক্ষা বাহিনী। কিন্তু হামিদ হোসেনকে জেরা করতে চায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ। রেল সুরক্ষাবাহিনী সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে হামিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছে তারা। এখন হামিদকে নিয়ে রেলপুলিশ অসমে গিয়েছে ঘটনার পুনর্নির্মাণে। তারা ফিরলে হামিদকে এবং প্রয়োজনে জেল হেফাজত থেকে ফের রিমান্ডে নিয়ে হামিদের সঙ্গীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। ওদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে অসমের বদরপুর সীমান্তে ফের ধরপাকড় শুরু করেছে রেল সুরক্ষাবাহিনী। শনিবার বদরপুরে আরও চার রোহিঙ্গা ধরা পড়েছে বলে কাটিহার ডিভিশন সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, এজেন্টদের টাকা দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে নথি জাল করে ভারতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে হামিদদের মতো শরণার্থীরা। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কি সত্যিই বাসস্থানের খোঁজ? নাকি অন্য কিছু? হামিদকে জেরা করে প্রাথমিক ভাবে রেলপুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এদের অনেকেই অস্ত্র চালাতে পারদর্শী। তাই উদ্বেগ ও চিন্তা আরও বেড়েছে। বেড়েছে সন্দেহও। তার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি হামিদকে নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এনআইয়ের অধীনস্ত একটি সংস্থা খোঁজ নিয়েছে। তারা একটি তদন্ত আলাদা করে শুরু করতে পারে বলে রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে বলা হচ্ছে, কার্যত বিনা বাধায় এই ভাবে যদি রোহিঙ্গারা ভারতে ঢুকে পড়তে পারে এবং দীর্ঘ পথ যাত্রা করতে পারে, তা হলে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। সূত্রের দাবি, রেলসুরক্ষা বাহিনী, এনআইএ ছাড়াও সীমা সুরক্ষা বলের গোয়েন্দারাও রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। যদিও তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, প্রাথমিক জেরায় হামিদ স্বীকার করেছে, কাঁটাতার পার করে তাদের ট্রেনে তুলে দেওয়া পর্যন্ত তারা পদে পদে বিভিন্ন স্তর থেকে সাহায্য পেয়েছে। এই কথা জানতে পেরে গোয়েন্দারা এখন ধরতে চাইছেন, প্রশাসনের কে বা কারা এই গাফলতির পিছনে রয়েছেন?
সেই সবের খতিয়ানও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ নিতে শুরু করেছে। ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন একাধিক আধিকারিক। কাটিহার ডিভিশনে রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘কীভাবে আরও কড়া নিরাপত্তা সাজানো যায়, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা হচ্ছে। আমরা আমাদের তরফেও কী কী করণীয় তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’