ফাইল চিত্র।
বছর দুয়েকের টানাপড়েনের পরে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন তৈরির ছাড়পত্র মিলল। এই ভবন তৈরিতে প্রায় ৩৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দে ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের অর্থ দফতর অনুমোদন দিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজ্যের পূর্ত দফতরের টেন্ডার কমিটি চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়ে দ্রুত কাজ শুরুর সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
এর অর্থ, বেঞ্চের কাজ শুরু করতে আরও কোনও বাধা থাকল না। ভবন তৈরির জন্য দ্রুত ইট গাঁথার কাজ শুরু করতে নির্দেশ এসেছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, টেন্ডারটি পেয়েছে দেশের প্রথম সারির এক নির্মাণ সংস্থা। কুতুব মিনার-সহ দেশের একাধিক স্থাপত্যের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সংস্থাটি। পূর্ত দফতরের নর্থ জ়োনের মুখ্য বাস্তুকার ভাস্কর ঘোষ বলেন, “সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন তৈরির টেন্ডার গৃহীত হয়েছে। বিচারবিভাগ এবং অর্থ দফতর থেকে অনুমোদন মিলেছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়ক লাগোয়া জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে প্রায় ৪০ একর জমিতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন তৈরি হবে। স্থায়ী ভবনের প্রথম শিলান্যাস হয়েছিল ২০১২ সালে। সূত্রের খবর, হাইকোর্ট প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই সেই সময় ভবনের নকশা তৈরি হয়েছিল। সেই টেন্ডার প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। নতুন করে নকশা তৈরি এবং হাইকোর্টের থেকে সেই নকশা অনুমোদন করিয়ে ফের ২০১৮ সালে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই টেন্ডার পূর্ত দফতরই বাতিল করে। নকশা সংক্রান্ত বিষয়ে বারবার বদল হওয়ায় সেবার দর ঠিক করতে সমস্যা হয়েছিল বলে খবর। তার পরে নতুন করে টেন্ডার হলেও প্রথম টেন্ডার ভেস্তে যায়। প্রথম টেন্ডারে মাত্র দু’টি সংস্থা অংশ নিয়েছিল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফের টেন্ডার হয়। এতে চারটি সংস্থা অংশ নেয়। সেই টেন্ডারে অর্থ দফতরের ছাড়পত্র পেতেই
গোটা বছর গড়িয়ে যায়। বুধবার টেন্ডার প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত নথিপত্র এসেছে পূর্ত দফতরের জলপাইগুড়ি অফিসে।
পাঁচতলা ভবন হচ্ছে সার্কিট বেঞ্চের জলপাইগুড়ির স্থায়ী বাড়িতে। মূল ভবনে প্রধান বিচারপতি-সহ অন্যান্য বিচারপতিদের অফিস এবং এজলাস হবে। স্থায়ী ভবন চত্বরে প্রধান বিচারপতি-সহ মোট ১৫ জন বিচারপতির বাংলো থাকবে। অডিটোরিয়াম-সহ হাইকোর্টের আধিকারিক এবং কর্মীদের আবাসনও তৈরি হবে স্থায়ী ভবন চত্বরে। জলপাইগুড়িতে এখন অস্থায়ী ভবনে সার্কিট বেঞ্চ চলছে। বিচারপতিদের জন্যও অস্থায়ী বাংলোর বন্দোবস্ত হয়েছে। মাসে গড়পড়তা ১৫ দিন করে জলপাইগুড়ি সার্কিটে ডিভিশন এবং সিঙ্গল বেঞ্চ বসছে।