ফাইল চিত্র।
যে বিমল গুরুংয়ের সমর্থন নিয়ে দার্জিলিং বিধানসভা আসনে জিতেছিলেন নীরজ জিম্বা, তাঁকেই এখন ‘নীলবর্ণ শেয়াল’ বলে উল্লেখ করলেন তিনি। জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নীরজ বিজেপির প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা উপনির্বাচনের জেতেন। তিনি এ দিন গুরুং সম্পর্কে বলেন, ‘‘বিমল তো একসময় বাঘের মতো হাবভাব করতেন। এখন দেখছি, তিনি নীলবর্ণ শেয়াল। দূরদর্শিতা বলে কিছু নেই। পাহাড়বাসীর কাছে কোনও কথাই রাখেননি।’’ নীরজের কথায়, ‘‘বিজেপি সঙ্গে নানাভাবে সম্পর্ক রেখে এখন পাহাড়ে ফিরতে রাজ্যের কোলে ঝাঁপ দিয়েছেন। ওঁকে পাহাড়ের মানুষ আর বিশ্বাস করবে না বলেই আমার ধারণা।’’
২১ অক্টোবর বিমল কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করেন এবং জানিয়ে দেন, মোদী-অমিত শাহ কথা রাখেননি বলে তিনি বিজেপির সঙ্গ ছাড়ছেন, হাত ধরছেন তৃণমূলের। তার পর থেকেই চাপা উত্তেজনা রয়েছে পাহাড়ে। দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে দু’টি মিছিল করে বিনয় তামাংপন্থীরা বিমল-বিরোধী বার্তা দিয়েছেন। এ বারে বিমলের বিরোধিতায় নামলেন নীরজও।
নীরজ বলেন, ‘‘গুরুংকে কেউ আর বিশ্বাস করবে না। একটা লোক পাঁচ বছর জিটিএ চালাতে পারেনি। তিনবার আন্দোলন করেছে। দু’বার ইস্তফা দিয়েছে। পাহাড়ের সম্পত্তি নষ্ট করে প্রাণহানির কারণ হয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এই নেতার কি কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে!’’
সুবাস ঘিসিং, মন ঘিসিং পরিবারের ঘনিষ্ঠ নীরজ জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় সদস্য। দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে কোনও কালেই বিমলের সম্পর্ক ভাল ছিল না। ২০১৭ সালে আন্দোলন চলাকালীন নীরজের গাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটে। পরে জিএনএলএফ তৃণমূলের দিক থেকে সরে এসে বিজেপির হাত ধরে। বিমলও ওই জোটের শরিক হন। অমর সিংহ রাই লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী হওয়ার সময় দার্জিলিঙের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। সেখানে উপনির্বাচনে বিনয় তামাংয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে জয়ী হন নীরজ। তাঁকে জেতাতে গুরুংপন্থীরা সক্রিয় হন। বিধায়ক হলেও গুরুংয়ের সঙ্গে নীরজ বা মন ঘিসিংদের খুব একটা সখ্য ছিল না। নতুন পরিস্থিতিতে তাই গুরুং বিরোধিতার সুর চড়াচ্ছে জিএনএলএফও। দলের সভাপতি মন ঘিসিং বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে মানুষই সব। তাঁদের কথা শুনেই কাজ করছি।’’
গুরুং তৃণমূলের হাত ধরায় অসন্তুষ্ট একাংশ মোর্চা কর্মী, সমর্থকের জন্যও রাস্তা খোলা রাখছে জিএনএলএফ। দলের একাংশের আশা, বিমল ও বিনয় গোষ্ঠীর বিবাদে অনেক কর্মীরই দলত্যাগ করা সম্ভাবনা। বৃহস্পতিবারই লোপচু, পেশক এলাকায় জিএনএলএফে যোগদানের ঘটনা ঘটেছে।