ফাইল চিত্র।
জমি জটের কারণে উত্তরবঙ্গে চার লেনের পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের কাজ থমকে রয়েছে— এ কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসনের সাহায্য চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। চিঠির সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চলা জনস্বার্থ মামলায় গত ২৩ ডিসেম্বরের অর্ন্তবর্তী নির্দেশের প্রতিলিপিও পাঠিয়েছেন তাঁরা। জাতীয় সড়ক সংক্রান্ত ওই জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে ওই দিন হাইকোটের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, চার লেনের সড়কের জমি পেতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সব রকম সাহায্য করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনগুলিকে। যে দিন হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সেই তারিখটিই মুখ্যসচিবকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাঁদের চিফ জেনারেল ম্যানেজার তথা কলকাতার আঞ্চলিক আধিকারিক আরপি সিংহ ওই চিঠিটি লিখেছেন মুখ্যসচিবকে।
চার লেনের পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়ক তৈরিতে জমি জটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। জমি জট কাটিয়ে সুষ্ঠুভাবে সড়ক তৈরিতে নজরদারি করতে হাইকোর্ট একজন স্পেশ্যাল অফিসারও নিয়োগ করেছে। হাইকোর্টের নজরদারিতে জলপাইগুড়ি জেলায় জমি জট তুলনামূলক কাটলেও উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় জটের কারণে সড়কের কাজ শুরুই করা যায়নি বলে দাবি। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা মিলিয়ে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ক তৈরি হবে। এর মধ্যে মাত্র ১৯ কিলোমিটারে জমি পেয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বাকি অংশের জমি এখনও মেলেনি বলে দাবি।
যে অংশের জমি মেলেনি, সেখানকার জমিদাতাদের একাংশ ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন, কিন্তু অন্য অংশ ক্ষতিপূরণের হার বৃদ্ধির দাবি তুলে মামলা করেছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি।
ক্ষতিপূরণের হার নিয়ে বিবাদ চলতে থাকলেও জমি পেতে আইনত বাধা আসা উচিত নয় মুখ্যসচিবকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সে প্রসঙ্গে ওই জনস্বার্থ মামলাতেই ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বরের একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশের উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন যে, নির্দেশে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ক্ষতিপূরণের হার নিয়ে মামলা চলছে বলে কারণ দেখিয়ে জাতীয় সড়কের কাজে বাধা তৈরি করা যায় না।
ঘোষপুকুর থেকে ধূপগুড়ি এবং ফালাটাকা থেকে সলসলাবাড়ি—এই দুই ভাগে কাজ শুরু করেছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তার পরে প্রায় আট বছর কেটে গেলেও কোনও অংশের কাজই শেষ হয়নি। জমি জট নিয়ে জাতীয় সড়কের চিঠি প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের এক জেলাশাসক বলেন, “আমরা তো সাধ্য মতো সহযোগিতা করছি। কোনও অনিচ্ছুক জমিদাতাকে তো আর লাঠি মেরে তুলে দেওয়া যায় না। আলোচনা চালাচ্ছি।” তবে মানছেন, চাপ বেড়েছে।