নিজস্ব চিত্র
ফসল বাঁচাতে জমি ঘিরে রাখা তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু একাধিকবার ঘটেছে। এ বার কি বাড়ি ঘিরে রাখা বৈদ্যুতিক তার ছুঁয়ে মৃত্যু হল এক দাঁতালের? মঙ্গলবার বীরপাড়ার রামঝোরা চা বাগানে পূর্ণবয়স্ক হাতির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় এই প্রশ্নই দানা বেঁধেছে। এ দিন সকালে হাতির দেহটি উদ্ধার করে বন দফতর।
বনকর্তারা জানিয়েছেন, রামঝোরা চা বাগানের যে জায়গায় হাতির দেহটি মিলেছে, তার পাশেই রয়েছে বসতি। সেখানে কেউ বা কারা হাতির হানা থেকে নিজের বাড়িঘর বাঁচাতে বিদ্যুতের তার লাগিয়ে রেখেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত বনকর্তারা। আর তাতে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। বন কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, দাঁতাল হাতিটির শুঁড়ে কোনও ভাবে বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে গিয়েছিল।
এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত বন দফতরের শীর্ষ কর্তারা। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, “খেতের ফসল বাঁচাতে অনেক সময়ই ঘিরে রাখা তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে হাতি মারা যায়। কিন্তু এ দিনের ঘটনা প্রাথমিক তদন্তের পর দেখা যাচ্ছে, হাতির হানা রুখতে বাড়ি ঘিরে বিদ্যুতের তার রাখা ছিল। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে পড়ে না। এটা যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রুখতে মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে জলপাইগুড়ি বন বিভাগের বীরপাড়ার দলগাঁও রেঞ্জের বনকর্মীরা রামঝোরা চা বাগানে হাতির মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পান। তাঁরা সেখানে ছুটে যান। জলপাইগুড়ি বিভাগের শীর্ষ বনকর্তারাও সেখানে যান। ঘটনাস্থল থেকে তারের টুকরো উদ্ধার হওয়ার পরই সন্দেহ দানা বাঁধে বনকর্তাদের। দফতরের এক আধিকারিক জানান, এখনও রিপোর্ট না মিললেও ময়নাতদন্তেও প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, তড়িদাহত হয়েই হাতিটি মারা গিয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলের ঠিক পাশেই জনবসতি। সেখান থেকেই কেউ এই তারটি রেখেছেন বলে তাঁরা নিশ্চিত। ঘটনাস্থলে বনকর্মীরা পৌঁছনোর আগেই সেই প্রমাণ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। জলপাইগুড়ির ডিএফও মৃদুল কুমার বলেন, “এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’