বিয়ের সাতদিন আগে যুবতীর ফাঁস লাগানো দেহ উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিলিগুড়ি লাগোয়া ফাঁসিদেওয়ায়। শুক্রবার সকালে কান্তিভিটা এলাকায় বাড়ির পাশে ক্যানেলের ধার থেকে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় এক যুবতীর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবতীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হবু বরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়িও কান্তিভিটা এলাকাতেই। নাম সুভাষ সিংহ। ওই যুবক পেশায় গাড়িচালক।
দার্জিলিংয়ের জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘ধৃতের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা হয়েছে। তাকে শনিবার শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হবে।’’
কেন যুবতীকে খুন করা হয়েছে, সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে না পারলেও, তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান ধৃত যুবক বিয়েতে রাজি ছিল না। যদিও, এলাকায় দু’জনের সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় জোর করে বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল বলে পুলিশ জেনেছে। সে কারণেই যুবতীকে ডেকে খুন করা হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
পরিবার এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত তরুণী ও ধৃত যুবকের মধ্যে পাঁচ মাস আগে একটি অনুষ্ঠানে আলাপ হয়। তারপর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা হয়। তাঁদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হতেই যুবতীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের জন্য যুবককে ডেকে চাপ দেওয়া হয়। চাপে পড়েই যুবক বিয়েতে রাজি হয়েছিল বলে দাবি। সেই মত আগামী ১৭ জুন বিয়ে ঠিক হয়। দু’জনকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেও দেখা গিয়েছে বলে দাবি।
নিহত তরুণীর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দীপিকা জানিয়েছিল সুভাষের সঙ্গে শিলিগুড়িতে কেনাকাটা করতে যাবে। বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর থেকে তার কোনও খোঁজ মেলেনি। মোবাইলও বন্ধ ছিল। যুবতীর পরিবারের তরফে সুভাষের বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। সে দিন রাতে সুভাষ বাড়িতেই ছিল বলে পুলিশ জেনেছে। দীপিকার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথাও সুভাষ অস্বীকার করে বলে যুবতীর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়। সেই রাতেই যুবতীর পরিবারের থেকে থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন সকালে বাড়ির কাছেই ক্যানাল রোডে যুবতীর দেহ মেলে।
পুলিশের ধারণা আগের দিন সন্ধ্যার দিকেই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। যুবতীর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। গাড়ির ভিতরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে পরে রাস্তা থেকে ক্যানেলের দিকে অন্ধকারে গড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দেহটি ক্যানালের জলে না পড়ে আটকে গিয়েছিল। ধৃত যুবক গত বৃহস্পতিবার দিনভর কোথায় ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।