সরকারি জায়গায় কংক্রিটের ব্যারিকেড। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
একটি দোকান কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই সিসিটিভি বসিয়ে তা উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রণ করেন পুলিশকর্তাদের। কিন্তু সেখানে পৌঁছে পুলিশকর্তাদের চক্ষু চড়কগাছ। ফুটপাত দখল করে তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক ভবনে ঢোকার জায়গা। লোহা-কংক্রিটের ঢালাই করা বির্তকিত ওই জায়গাটি দিয়েই যাতায়াত করতে হল পুলিশ কর্তাদেরও। দোকান কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, কে বা কারা ওই প্যাসেজ তৈরি করেছে তা তাঁরা জানেন না।
বৃহস্পতিবার হিলকার্ট রোডে সেই দোকানের সামনে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার উদ্বোধন করতে গিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসিপি মৃণাল মজুমদার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে এমন তা জানতাম না।’’ কিন্তু কী করবেন তাঁরা? মৃণালবাবু বলেন, ‘‘এমনটা উচিত নয়। রাস্তার দু’পাশ থেকে জবরদখল তুলে ফেলার জন্য পুরসভার সহযোগিতা চেয়েছি। আলোচনাও হচ্ছে। এ বিষয়টিও তাদের নজরে আনব।’’ পুলিশের দাবি, ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পুরসভাকেই উদ্যোগী হতে হয়। আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও সমস্যা তৈরি হলে পুলিশ পদক্ষেপ করে।
তবে দোকানের সামনে বসানো ওই ক্যামেরাতে হিলকার্ট রোডের বড় অংশের ফুটেজ দিন-রাত মিলবে বলে দাবি করা হয়েছে। পুলিশের তরফেও সম্প্রতি ব্যবসায়ী সমিতির কাছে বিভিন্ন দোকান, বাণিজ্যিক ভবনের সামনে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর আর্জি জানানো হয়। তা মেনেই হিলকার্ট রোডের দোকান কর্তৃপক্ষ হাই ডেফিনেশন ক্যামেরা বসিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
কিন্তু ওই দোকানের সামনে থাকা ফুটপাত দখল করে স্থায়ী নির্মাণ অস্বস্তিতে ফেলেছে পুলিশ কর্তাদেরও।
সদা ব্যস্ত হাসমিচকের সামনে হিলকার্ট রোডের ফুটপাতে ঢালাই করে, লোহা বসিয়ে প্যাসেজ তৈরি হলেও এত দিন কেন প্রশাসনিক পদক্ষেপ হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সম্প্রতি পুলিশের তরফে ‘সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ অভিযান শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা চলা করতে অনুরোধ করা হয়েছে পথচারীদের। তবে ফুটপাতে স্থায়ী নির্মাণ হয়ে যাওয়ায় হাঁটার জায়গা নেই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। লোহা-কংক্রিটের বাধায় বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। দোকানের অন্যতম কর্ণধার দীপক সাহা পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘ফুটপাত দখল করে আমরা কোনও নির্মাণ করিনি। পুলিশের আর্জি মেনেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সারা রাত ক্যামেরা অন থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে আমরা কর্তব্য পালন করছি।’’
কিন্তু শুধু হিলকার্ট রোডের ওই অংশেই নয়, হাসমিচক থেকে দার্জিলিং মোড়, সেবক রোড, বিধান রোড সর্বত্র ফুটপাত দখল করে প্যাসেজ তৈরি হয়েছে। যার জেরে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাচলাই দায় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুরসভার তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালাতে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। শহরের কোনও এলাকাগুলিতে প্রথমে অভিযান হবে তার তালিকাও করা হয়েছে।