ইসলামপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবীর (পিপি) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া কাইজার চৌধুরীকে। কাইজার ইসলামপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন জনস্বাস্থ্য ও গ্রন্থাগারমন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর ভাই। কাইজারের জায়গায় পিপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুকতার আহমেদকে। মুকতার গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির ভাগ্নি জামাই। গত ৫ অক্টোবর রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করে মুকতারকে ইসলামপুর মহকুমা আদালতের পিপির দায়িত্ব দিয়েছে। জেলাশাসক আয়েশা রানি জানান, প্রশাসনের তরফে মুকতারবাবুকে সরকারি নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। করিম চৌধুরী এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে করিমবাবু ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর সুপারিশেই ওই বছরের জুলাই মাসে কাইজারকে পিপির দায়িত্ব দেয় রাজ্য সরকার। গত বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য করিম জোটপ্রার্থী কংগ্রেসের কানাইয়ালাল অগ্রবালের কাছে হেরে যান। সেই নির্বাচনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন কাইজারের ছেলে তথা করিমের ভাইপো পেশায় আইনজীবী আলতামাস চৌধুরীও।
কাইজারের দাবি, মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ষড়যন্ত্র করে নিজের আত্মীয়কে পিপি-র পদে বসানোর জন্য তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি গত সাড়ে তিন দশক ধরে আইনজীবীর পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। গোলামবাবু প্রথমবার মন্ত্রী হয়ে আমাকে পিপি-র পদ থেকে সরিয়ে তাঁর আত্মীয়কে ওই পদে বসিয়েছেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘প্রবীণ আইনজীবী কাইজারবাবুকে কেন পিপি-র পদ থেকে সরানো হল, সেটা জানি না। প্রয়োজনে দলের তরফে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।’’
গোলামের পাল্টা দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে কাইজার তাঁর ছেলেকে করিমের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড় করিয়ে করিমকে হারিয়ে দলবিরোধী কার্যকলাপ করেছেন। কিছু দিন আগে তিনি করিম, গোলাম-সহ দলের একাধিক জেলা নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্য করেছেন। সেই কারণেই রাজ্য সরকার তাঁকে পিপি-র পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কাইজার পদ হারিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
কাইজারের পাল্টা দাবি, ‘‘আমার ছেলে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল। আমি দলবিরোধী কার্যকলাপ করে থাকলে দল আগেই আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত।’’