নিজস্ব চিত্র
রাতের খাবার নিয়ে অশান্তি। তাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ২ সন্তানকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করল মা। মর্মান্তিক এই ঘটনায় হতবাক মালদহের চাঁচোল ২নং ব্লকের অনুপ নগর এলাকার মানুষেরা। ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত কন্যা সন্তানের মা এবং ঠাকুরমাকে গ্রেফতার করেছে চাঁচল থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুধু রাতে খাবার নিয়ে অশান্তি নয়, পর পর দুই কন্যা সন্তান জন্মানোর জন্য মাঝে মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর বচসা হত।
ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন মৃত ২ মেয়ের বাবা চঞ্চল মণ্ডল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরি, তখন স্ত্রীয়ের সঙ্গে আমার রাতের খাবার নিয়ে তুমুল বচসা হয়। বচসার পর যে যার মতো রাতে ঘুমিয়ে পড়ি। বড় মেয়ে আমার পাশেই ঘুমিয়েছিল।’’
সকালবেলা উঠেই চঞ্চল খবর পান মেয়ে জলে ডুবে গিয়েছে। বলেন, ‘‘সকালে উঠে জানতে পারি, মেয়ে পুকুরের জলে ডুবে গিয়েছে। তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে ছুটে গিয়ে দেখি গ্রাম থেকে দূরে, মাঠের পাড়ে একটি পুকুরে আমার ২ মেয়ের দেহ ভাসছে।’’
চঞ্চলের মৃত দুই মেয়ের নাম মাধুরী মণ্ডল (১০) ও জয়শ্রী মণ্ডল (৮)। অভিযুক্ত মায়ের নাম মাম্পি মণ্ডল। রবিবার সকালে ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। এর মধ্যে মেয়েদের দেহ জলে ভাসতে দেখে মাকে আটকে রাখেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত মাম্পিকে গ্রামবাসীদের থেকে ছাড়িয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।
উদ্ধার করা হয় ২ মেয়ের দেহ। চঞ্চল জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছে। সেই কারণেই হয়তো সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। যদিও এলাকার মানুষ সেই কথা মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, বিয়ের পর থেকে এই দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। পরপর ২ কন্যা সন্তান জন্মানোর পর সেই অশান্তি আরও বাড়ে। সেই কারণেই ২ সন্তানকে প্রাণ দিতে হল বলে মনে করছেন তাঁরা। কোনও কারণে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্য এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী। দেহ দু’টি মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাড়ি গিয়ে পাছে বলে দেয়, তাই ‘খুন’ অনীককে
আরও পড়ুন: হাফ প্যান্ট মন্ত্রী, পর্যটনের কিছুই জানেন না, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কটাক্ষ রবীন্দ্রনাথের