Karandighi

মসজিদে প্রতিদিনের নমাজে তহমিনা, সালমারা

সালমা, তহমিনারা জানালেন উত্তর দিনাজপুরের এই জনপদে এক দিনে এই পরিস্থিতি হয়নি। এর পিছনে রয়েছে ধৈর্য বজায় রেখে এগিয়ে চলার লড়াই।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০২
Share:

তারাবির নমাজে যোগ মহিলাদের। নিজস্ব চিত্র

বছরে দু’বার ইদের নমাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার ছাড়পত্র রয়েছে। কিন্তু রমজান মাসে ঘরের কাজ সারার পরে, মহিলাদের বাড়িতেই পড়তে হত তারাবির নমাজ। এ বার ছবিটা বদলেছে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির বুড়িহান গ্রামে। এলাকার জামে মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দিনভর রোজা রাখার পরে, মসজিদেই সে নমাজ পড়তে পারবেন মহিলারা। সিদ্ধান্তে খুশি এলাকার তহমিনা খাতুন, বিবি হালেমা, সালমা খাতুনরা। তাঁরা জানান, বছরে দু’বার একত্রে জমায়েত হয়ে ইদের নমাজ পড়ায় এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারের পুরুষদের আপত্তি না থাকলেও, মসজিদে গিয়ে রমজান মাসের প্রতিদিন বাড়ির মহিলারা নমাজ পড়বেন, এমন রীতি ছিল না। সে সুবাদে এই সিদ্ধান্ত এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারের মহিলাদের কাছে বিশেষ আনন্দের।

Advertisement

সালমা, তহমিনারা জানালেন উত্তর দিনাজপুরের এই জনপদে এক দিনে এই পরিস্থিতি হয়নি। এর পিছনে রয়েছে ধৈর্য বজায় রেখে এগিয়ে চলার লড়াই। প্রথমে এলাকার মহিলা মহলে শুরু হয় কথা চালাচালি—কেন তাঁরা মসজিদে গিয়ে প্রতিদিনের নমাজ পড়তে চান। ‘যুদ্ধ’ শুরু হয় বাড়ির ভিতর থেকে। বাড়ির ছেলেদের বিষয়টি বোঝানো হয়। পরে, ছেলেরাই বাড়ির মেয়েদের দাবির কথা মসজিদ কমিটির কাছে জানান। তিন বছর আগে, মহিলাদের জন্য মসজিদে ইদের নমাজ পড়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু তখনও অনেকে বাধা দিয়েছিলেন। মাঝে দু’বছর করোনার প্রকোপে মসজিদে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ বার করোনার বাড়াবাড়ি নেই। তাই মসজিদে গিয়ে প্রতিদিনের নমাজ যাতে পড়া যায়, সে চেষ্টায় শামিল হয়েছিলেন মহিলারা। তহমিনা, সালমাদের কথায়, ‘‘আগে মহিলারা মসজিদে যেতেন বছরে দু’বার শুধু ইদের নমাজ পড়তে। এ বার থেকে সে ছবিটা বদলে গেল। প্রথমে সাত জন মিলে মসদিজে প্রতিদিন তারাবির নমাজ পড়া শুরু করি। এখন রোজই বাড়ছে নমাজ পড়তে আসা মহিলাদের সংখ্যা। এখন সে সংখ্যা চল্লিশে দাঁড়িয়েছে।’’

মসজিদে মহিলারা নমাজ পড়তে পারবেন কি না, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। স্থানীয় মসজিদের ইমাম ওমর ফারুক বলেন, “শরিয়ত অনুযায়ী, মহিলারা চাইলে মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়তেই পারেন। তবে সেখানে তাঁদের নমাজ পড়ার আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। যা এখানে, করা হয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement