Durga Pujo 2023

প্রতিপদে কালীমন্দিরে ঘট বসিয়ে শুরু হয়ে যায় বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির ৫০০ বছরের পুরনো পুজো

রাজবাড়ির ইতিহাস নিয়ে গবেষণারত উমেশ শর্মা জানান, ৫১৩ বছর আগে অসমের ঠুটাঘাট পরগনায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন শিষ্য সিংহ, বিশ্ব সিংহ। মাটির ঢেলা দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিলেন তাঁরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:০১
Share:

বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে মা সেজে ওঠেন আটপৌরে শাড়িতে। — নিজস্ব চিত্র।

এখন আর বলি হয় না। দশমীতে নীলকণ্ঠ পাখিও ওড়ানো হয় না। তবু জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো বাকি পুজোর থেকে আলাদা। প্রতিপদের দিন স্থানীয় কালীমন্দিরে মায়ের ঘট বসানো হয়। তখন থেকেই শুরু হয় পুজো। এ কথা জানালেন রাজপুরোহিত শিবু ঘোষাল।

Advertisement

এই পরিবারের প্রতিমার গায়ের রং গলানো সোনার মতো। টানা টানা চোখ। খোলা চুলে আটপৌর শাড়িতে সেজে ওঠেন মা। ইতিহাস গবেষকদের দাবি, জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির পুজোর সূচনা হয়েছিল ৫১৩ বছর আগে। সূচনা করেছিলেন শিষ্য সিংহ এবং বিশ্ব সিংহ নামে দুই ভাই।

রাজবাড়ির ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন উমেশ শর্মা। তিনি জানান, ৫১৩ বছর আগে অসমের ঠুটাঘাট পরগনায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন শিষ্য সিংহ, বিশ্ব সিংহ। মাটির ঢেলা দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিলেন তাঁরা। কথিত, দেবী দুর্গার আশীর্বাদে সেই বছরই কোচবিহারের রাজা হন বিশ্ব সিংহ। জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুরে এসে রাজত্ব শুরু করেন শিষ্য সিংহ। আজ যেখানে বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল, সেখানেই ছিল প্রথম রাজার বাড়ি। সেখান থেকে পরে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন রাজবাড়ি পাড়ায় তৈরি করা হয় রাজবাড়ি। সেখানেই শুরু হয় পুজো।

Advertisement

রাজত্ব হারালেও এখনও বংশ পরম্পরায় পুজো করেন রাজপরিবারের সদস্যেরা। বর্তমানে রাজপরিবারের সদস্য প্রণতকুমার বসু জানান, ‘‘দেবীর বর্ণ তপ্ত কাঞ্চনের মতো। তাঁর পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের পাশাপাশি থাকেন দেবীর দুই সঙ্গী জয়া ও বিজয়া। একই সঙ্গে পূজিত হন ব্রহ্মা এবং শিব।’’ তিনি জানালেন, কালিকা পুরাণ মতে পুজো হয় এই বাড়িতে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পুজো। অষ্টমীতে থাকে বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা। এক সময় বলি চালু ছিল রাজ বাড়িতে। এখন তা বন্ধ। চাল কুমড়ো বলি দিয়ে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়।

পুজো দেখতে ভিড় করেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষজন। বাংলাদেশ থেকেও অনেকেই আসেন পুজো দেখতে। দশমীর নিরঞ্জনেও বিশেষ ব্যবস্থা থাকে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে। রথে করে সপরিবারে বাড়ির পুকুর ঘাটে যান দেবী দুর্গা। শূন্যে গুলি ছুড়ে দেবীকে বিদায় জানান পরিবারের সদস্যরা। শুরু হয় সিঁদুর খেলা। তার পরেই নিরঞ্জন। পুরোহিত শিবু ঘোষাল জানিয়েছেন, মায়ের মূর্তি গড়ার সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শাড়ি এবং অস্ত্র তুলে দেওয়ার পালা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement