সতর্কতা: অসম সীমানার বারবিশায়। নিজস্ব চিত্র।
অসম-মিজোরামের সীমানা বিবাদের জেরে নিরাপত্তা বাড়ল অসম-বাংলা সীমানাতেও। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলার অসম সীমানায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সতর্ক করে রাখা হয়েছে এসএসবিকেও। একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও সীমানায় নজর রাখছে বলে খবর। সীমানায় নজর রয়েছে সেনা গোয়েন্দাদেরও, দাবি সূত্রের। অসম পুলিশ সে রাজ্যের কিছু এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। সেই তালিকায় রয়েছে অসম-বাংলা সীমানাও। যদিও অসম-মিজোরামের সীমানা নিয়ে বিবাদস্থল বঙ্গ-সীমা থেকে অনেকটাই দূরে। তবু কেউই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বিশেষ করে অসমের ৬ পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর পরে সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যই যে ভাবে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনও উদ্বিগ্ন। যদিও এ রাজ্যে অসম সীমানা বরাবর সরকারি ভাবে কোনও সর্তকতা জারি করা হয়নি। তবে নজরদারি বেড়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম এবং কোচবিহারের বক্সিরহাটে অসম সীমানায় পুলিশের গতিবিধি বেড়েছে। এত দিন করোনা পরীক্ষার জন্য কড়াকড়ি ছিল। গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের টিকার কাগজ বা করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পরীক্ষা চলছিল। এ দিন ভাল করে মালপত্র পরীক্ষা করতে দেখা গিয়েছে কুমারগ্রামে। বক্সিরহাটে অসম সীমানায় পুলিশের ক্যাম্প বসেছে। আপাতত সেই ক্যাম্প থাকবে।
অসম সীমানায় এমন কড়াকডির বেশ কিছু কারণ রয়েছে। কুমারগ্রামের এক দিকে ভুটান সীমান্ত। অসম-মিজোরাম বিবাদের জেরে বেশ কিছু এমন সংগঠন মাথা তুলতে পারে বলে আশঙ্কা, যারা ভুটান লাগোয়া কোনও এলাকা থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে অসমে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। আবার উল্টো পথে বঙ্গের করিডর ব্যবহার করে অসম ও মনিপুর হয়ে মিজোরামে ঢুকতে পারে। এই ধরনের সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা চলার সময়ে পুলিশ অফিসারদের একাংশ মনে করাচ্ছেন, কেএলও জঙ্গিরাও একসময়ে এই পথগুলি ব্যবহার করত।
এ দিনই ভুটান সীমান্তে নজর রাখতে কুমারগ্রামে এসএসবির অতিরিক্ত বাহিনী নামে। কুমারগ্রাম থানার আইসি বাসুদেব সরকারের অবশ্য দাবি, ভুটান সীমান্ত এবং অসম সীমানায় সারা বছরই নজরদারি চলে। উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ কর্তার কথায়, “অসম-মিজোরাম সীমানা বিবাদের সুযোগ নিয়ে অশান্তি তৈরি করতে পারে, এমন বহু সংগঠন ওই দুই রাজ্যেই রয়েছে। সেই সব শক্তি যেন বাংলায় ঢুকে না পড়ে বা বাংলাকে করিডর না করে, সেটাই দেখতে হবে।”