কামান: মশা মারতে ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি এ বার ছড়িয়ে পড়ছে শিলিগুড়ি পুরসভার নানা ওয়ার্ডে। একাধিক ওয়ার্ডে ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মেলায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি সামলাতে শিলিগুড়িতে দুই জন পতঙ্গবিদ নিয়োগ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জোনাল ম্যালেরিয়া অফিসে থেকে তাঁরা কাজ করছেন।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘এ বছর ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দু’জন পতঙ্গবিদ এখন থেকে শিলিগুড়িতে স্থায়ী ভাবে থেকে কাজ করবেন।’’ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির জীবাণু বাহক মশার লার্ভা মিলেছে। পতঙ্গবিদদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি দেখে মশার লার্ভা মারার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
১২ নম্বর ওয়ার্ডে বিমল সিংহ সরণিতে একই পরিবারের দুই মহিলা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলেজপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি। বাড়িতে আরেক জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর রক্ত পরীক্ষাও হচ্ছে। ওই পরিবারের অনুপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমার মেয়ে ও পুত্রবধূর ডেঙ্গি হয়েছে। তিন দিন নার্সিংহোমে ভর্তি। দাদার স্ত্রীও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।’’ ওই রাস্তায় আরও কয়েকটি বাড়িতে বাসিন্দারা জ্বরে আক্রান্ত। রবিবার এলাকায় সচেতনতা শিবির করার পরিকল্পনা নিয়েছেন কাউন্সিলর নান্টু পাল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় মশা মারতে পুর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগই নেই।
২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রধাননগর এলাকায় ডেঙ্গিতে একাধিক জন আক্রান্ত। এর মধ্যে এলাকার বাসিন্দা কমল দাস শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে ইতিমধ্যেই চার ইউনিট প্লেটলেট দিতে হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা রামজনপ্রসাদ গুপ্তের স্ত্রী উর্মিলাদেবী জ্বর নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। শনিবার বাড়ি ফেরেন। রামজনবাবুর দাদার মেয়ে অনশিখা গুপ্তরও ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল ক’দিন আগে। চিকিৎসা করে এখন সুস্থ। ওই এলাকায় আও এনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মশার লার্ভ জন্মাচ্ছে বলে কাউন্সিলর স্নিগ্ধা হাজরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বাঘা যতীন কলোনির বাসিন্দা কনক সিদ্ধা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে চারদিন ধরে নার্সিংহোমে ভর্তি। তার প্লেটলেট ৩৪ হাজারে নেমে গিয়েছিল। এখন শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিনি জানান, তাঁদের পাড়াতেও অনেকে ডেঙ্গি, জ্বরে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই থেকে অন্তত ২০ জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা অনেক বেশি। শিলিগুড়ি হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি সন্দেহে অন্তত ৩০ জন ভর্তি রয়েছেন।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ২০-২২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেই হিসাবে এখনও শিলিগুড়িতে খুব বেশি ছড়ায়নি। আমরা শহর সাফ রাখতে নজর দিচ্ছি। চিকিৎসার বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে দেখতে হবে।’’