ভোট: হরিপুর জুনিয়র হাইস্কুলে শিশু সংসদ নির্বাচনে চলছে ভোটদান পর্ব। নিজস্ব চিত্র
ভোট-পর্ব মিটল শান্তিতেই। ফলের পরে নির্বাচিত হলেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, ক্রীড়া, খাদ্যমন্ত্রীরাও। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে চলল ভোটগ্রহণ। স্বস্তিতে প্রিসাইডিং অফিসার, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক।
স্কুলের পড়ুয়াদের ‘গণতন্ত্রের পাঠ’ দিতে সোমবার এমনই ভোট হল উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার হরিপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। তাতে তৈরি হল শিশু সংসদ।
স্কুল সূত্রে খবর, গণতন্ত্র এবং ভোট প্রক্রিয়া কী তা শেখাতেই এমন আয়োজন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে ভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়, ঠিক তেমন ভাবেই নির্বাচন হল স্কুলে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, নাম সংশোধন ও সংযোজনের সুযোগ, নির্বাচনের দিন ঘোষণা, পাঁচটি পদে পড়ুয়াদের মনোয়নয়নপত্র জমা ও প্রত্যাহার, ব্যালট পেপার তৈরি— পরপর হয় সবই। প্রাথীদের প্রতীক ছিল বই, কলম, চেয়ার, টেবিল। শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। নিরাপত্তারক্ষীও ছিল। তৈরি করা হয় ভোটকক্ষ, ব্যালটবাক্স। পড়ুয়ারা পছন্দের প্রাথীকে ব্যালটে ভোট দিয়ে ওই বাক্সে ফেলে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী ছিল ৩০ জন। প্রধানমন্ত্রী-সহ মোট ৫টি পদে প্রার্থী নির্বাচিত হয়। ভোটার সংখ্যা ছিল ৬৩। গণনায় পাঁচ জন প্রাথীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নেহা দাস। এ ছাড়া সংসদে শিক্ষামন্ত্রী, পরিবেশ, খাদ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদেও প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নেহা বলে, ‘‘খুব ভাল লাগছে। এক বছর স্কুলের সংসদের নেতৃত্ব দেব।’’
প্রধান শিক্ষক রাকেশ সরকার বলেন, ‘‘সর্বশিক্ষা অভিযানের নির্দেশ রয়েছে স্কুলগুলিতে শিশু সংসদ গঠন করতে হবে। মূলত স্কুলের পরিবেশ, মিড ডে মিল, পড়াশোনার বিষয়ে পড়ুয়া কতটা মনোযোগী— সে সব বিষয় দেখে শিশু সংসদ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে ভোটের মাধ্যমে শিশু সংসদ নির্বাচন করা হল। এতে পড়ুয়ারা ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারল। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কেও সচেতন হল।’’
স্কুলের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ও দীপমালা দাস বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে শিশুদের ভোটের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সঠিক প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার পদ্ধতি হাতে কলমে শেখানো হল।’’
ভোট-উৎসবে শামিল ছিলেন অভিভাবকেরাও। রমেন দাস বলেন, ‘‘আমার মেয়ে লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিল। ভোট ঠিক কী তার অভিজ্ঞতা হল।’’
স্কুলের এই উদ্যোগে খুশি গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিডিও কানাইয়াকুমার রায়, চাকুলিয়ার সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক অঞ্জন পালচৌধুরীও।