ফাইল চিত্র।
তিনি নিখোঁজ বলে শহর জুড়ে তাঁর নামে পোস্টার পড়ল। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নাম না করে রাজ্যের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চোরাই রেশনের চাল বিলির অভিযোগ তুললেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। এর মধ্যেই দুপুরে জেলা বিজেপির তরফে পোস্টার নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। সেখানে কারও নাম না থাকলেও মুখে তৃণমূল যোগের কথা বলেন নেতারা। তার পরে বিকালে সাংসদ প্রেস বিবৃতি দিয়ে ঘটনার নিন্দা করে পাল্টা তোপ দাগেন।
বুধবার রাতে শিলিগুড়ি শহরে বিভিন্ন রাস্তায় হঠাৎ করে সাংসদের ছবি দেওয়া পোস্টার দেখা যায়। সেখানে যা লেখা, তার নির্যাস: রাজু বিস্তা নিখোঁজ। রাজু এ দিন বলেছেন, ‘‘আমি দিল্লিতে আছি। সেখান থেকে পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের মানুষের কাজ করছি। এরা অন্ধ, আমাকে দেখতে পাচ্ছে না।’’ তার পরেই তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমাদের অঞ্চলের এক মন্ত্রী তো দলের কর্মীদের মধ্যে চোরাই রেশনের চাল বিলি করছেন। আমরা সেখানে খাবার, ওষুধ নিয়ে ৭৫ হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।’’ তবে কোনও মন্ত্রীর নাম বলেননি বিজেপি সাংসদ। তাঁর দলের নেতাদের দাবি, এই অঞ্চলের মন্ত্রীরা কী করছেন তা মানুষ জানে। আলাদা করে কারও নাম বলার দরকার নেই।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘একজন সাংসদের এমন কথাবার্তা শোভনীয় নয়। রাজু বিস্তাকে রেশন চোরাই চালের অভিযোগ নিয়ে প্রমাণ দিতে হবে। আমরা সাংসদের বিরুদ্ধে মামালা দায়েরের প্রস্ততি নিচ্ছি।’’ মন্ত্রী বলেন, ‘‘উনি গত কয়েক মাস ধরে জেলায় নেই, তা শুনেছিলাম। তবে নিখোঁজ বা সন্ধান চাই বলে পোস্টার পড়েছে, তা জানি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি কোথায় আছেন, কী করছেন— এ সব নিয়ে আমরা বিন্দুমাত্র চিন্তা করছি না। আমরা মানুষকে নিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যস্ত।’’ কে বা কারা পোস্টার সাঁটল, এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, বিপদের দিনে বিজেপি সাংসদকে তো এলাকায় পাওয়া যায় না। তিনি দিল্লিতে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকেন। তাই হয়তো ক্ষুব্ধ শহরবাসীর কেউ কেউ এ সব করেছেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এর আগেও এক দফায় বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে পাহাড়ে ‘নিখোঁজ’, ‘সন্ধান চাই’ বলে পোস্টার পড়েছিল। বুধবার মহাত্মা গাঁধী মোড়, হাসমিচক, ঝংকার মোড়ের মতো এলাকায় এমন পোস্টার পড়লে বিজেপি নেতারা সরব হন। তখন পুলিশ তা সরিয়ে নিয়ে যায়। এ দিন পুলিশে অভিযোগ করে বিজেপির জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল জানান, ‘‘প্রতিটি মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেখান থেকে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা দরকার। শাসকদলের জেলা সভাপতিও সাংসদের খোঁজ নেই বলছেন। এসবের পিছনে ওঁর কী ভূমিকা তা-ও দেখা দরকার।’’ এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের সমতলের সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘‘বিজেপি নেতারা কতটা নীচে নামবেন, তা মানুষ দেখুক।’’