বাজার ঘুরে বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন উদয়ন গুহ। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধে কোচবিহারে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। কিন্তু জেলার দিনহাটায় বন্ধের কোনও প্রভাব নেই। দোকানপাট খোলা। যান চলাচলও স্বাভাবিক। তাঁর এলাকায় বন্ধের কোনও ছাপই যে পড়েনি সেটা বোঝাতে হঠাৎ বাজারে বেরোলেন দিনহাটার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। থলেভর্তি শাকসব্জি কিনে টোটো করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে মন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘দিনহাটায় খেলাটা একতরফা।’’ বিজেপির অবশ্য দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধে সাড়া দিয়েছেন। তারা শাসকদলের মতো কোথাও ভয় দেখিয়ে দোকানপত্র বন্ধ করায়নি। তাই যাঁর ইচ্ছা হয়েছে দোকান খুলেছেন। যিনি মনে করেছেন আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানে গিয়ে ছাত্র সমাজের মার খাওয়া উচিত হয়নি, তাঁরা ধর্মঘটে সাড়া দিয়েছেন।
বুধবার সকাল থেকে কোচবিহারের জায়গায় দুই রকম ছবি উঠে এসেছে। কোথাও কোথাও দোকান-বাজার খোলা, কোথাও বন্ধ। তবে দিনহাটা সকাল থেকেই আর ছ’টা দিনের মতো বুধবারও স্বাভাবিক ছিল। এমনিতে বাজার করে দেখা যায় না মন্ত্রীকে। তবে বুধবার তাঁকে দেখা গেল ব্যাগ নিয়ে টোটোয় চেপে দিনহাটা চড়ারহাট বাজারে সব্জি কিনতে যাচ্ছেন। বাজারে গিয়ে দোকান ঘুরে নানা রকম সব্জি কিনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তার পর বন্ধের বিরোধিতায় প্রচার শুরু করেন। বস্তুত, কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির পক্ষ থেকে বন্ধের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মসূচি দেখা গেলেও দিনহাটায় তা দেখা যায়নি। তাই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না উদয়ন। তিনি বলেন, ‘‘দিনহাটায় তো কেউ বন্ধ ডাকেনি! বন্ধের সমর্থনে কাউকে মিছিল করতেও দেখা গেল না!’’ উদয়ন জানান, দিনহাটায় দোকানপাট খোলা। যান চলাচলও স্বাভাবিক। মানুষ বন্ধে সাড়াই দেননি। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি তো সকালে বাজার করেছি। টোটো করে ঘুরেছি। বাড়িতে আজ নিরামিষ রান্নাই হচ্ছে।’’ তার পর শ্লেষের সুরে বলেন, ‘‘প্রতিপক্ষ না থাকায় খেলাটা একতরফা হচ্ছে। তাই আমাদের ছেলেরা মুষড়ে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষ থাকলে খেলাটা ভাল হয়।’’
কোচবিহারের বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘শুধু কোচবিহারে নয়, রাজ্যের সর্বত্র সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধ পালন করছেন। কোচবিহার, দিনহাটা— সর্বত্রই বন্ধ পালন করা হয়েছে। কোথাও কোনও যানবাহন চলছে না।’’ পাল্টা মন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতার মন্তব্য, ‘‘এখন উদয়ন গুহ যদি কোথাও বাজার করতে গিয়ে দোকানদারদের বলেন, ‘তোর দোকানটা খোলা রাখিস, আমি বাজার করতে যাব, তা হলে তো আর বন্ধ ব্যর্থ হয়েছে বলা যায় না।’’