মানকুন্ডু স্টেশনে পুলিশ এবং লোকোপাইলটের তর্কাতর্কি। — নিজস্ব চিত্র।
পুলিশকর্মী: আপনি হর্নটা (হুইস্ল) মারুন না।
লোকোপাইলট: পারব না।
পুলিশকর্মী: আরে আমি বলছি তো আপনি হর্ন (হুইস্ল) দিন।
লোকোপাইলট: শুনুন, আপনি আমাকে প্রোটোকল শেখাবেন না। আপনি রেললাইন ক্লিয়ার করুন। আমি এত মানুষকে অসুবিধায় ফেলতে পারব না।
পুলিশকর্মী: আরে আপনি হর্ন দিন না!
বিজেপির ১২ ঘণ্টা বন্ধে হুগলির মানকুণ্ডু স্টেশনে উত্তেজনা যখন চরমে, তখনই কথা কাটাকাটিতে জড়ালেন পুলিশ এবং লোকোপাইলট। দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। পুলিশ দাবি করল, হুইস্ল দিয়ে রেললাইন থেকে অবরোধকারীদের যেন সরানোর চেষ্টা করেন লোকোপাইলট। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রস্তাব উড়িয়ে উল্টে পুলিশকে ‘নির্দেশ’ দিলেন ট্রেনচালক। পুলিশ এবং ট্রেনচালকের কাটাকাটি চলছে। তখনই দেখতে প্ল্যাটফর্মে জড়ো হয়ে গেলেন যাত্রীরা।
বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টা বাংলা বন্ধে বুধবার সকাল থেকেই হুগলির নানা জায়গায় অশান্তি হয়েছে। কোথাও তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ দেখা গিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রেলযাত্রীদের। হুগলির নানা জায়গায় রেললাইনে অবরোধ চলছে। মানকুণ্ডু স্টেশনে রেল অবরোধ ঘিরে একেবারে রণক্ষেত্র হয় পরিস্থিতি হয়। লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের সরানোর চেষ্টা করেও প্রথমে বেগ পায় পুলিশ। তাদের দিকে পাল্টা উড়ে আসে রেললাইনের পাথর। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তার মধ্যেই দাঁড়িয়ে পড়তে হয় যাত্রিবাহী একটি ট্রেনকে। সেখানেই পুলিশ এবং ট্রেনচালকের এই বাগ্বিতণ্ডা।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মানকুণ্ডু স্টেশনে আপ এবং ডাউন লাইনে রেল অবরোধ করে বিজেপি। দু’টি লাইনেই দাঁড়িয়ে পড়ে লোকাল ট্রেন। এক দিকে দাঁড়িয়ে ছিল বালুরঘাট এক্সপ্রেস। দূরপাল্লার ওই ট্রেনের যাত্রীরা বসেই থাকেন। অন্য দিকে, অফিস টাইমে রেল অবরোধ হওয়ায় হয়রানির শিকার হতে হয় লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের। জিআরপি এবং আরপিএফ অবরোধকারীদের হটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
স্টেশন থেকে এক অবরোধকারীকে সরিয়ে নিয়ে যেতে ‘যুদ্ধ’ পুলিশের। —নিজস্ব চিত্র।
একই ছবি দেখা গিয়েছে হিন্দমোটর স্টেশনেও। সেখানে বিজেপি এবং তৃণমূলের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। প্ল্যাটফর্মে ফেলে পেটানোর দৃশ্য দেখা যায়। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কার্যত দর্শক হয়ে যায় তারা।