প্রতীকী ছবি।
এলাকায় কাজ নেই বলে অভিযোগ। তাই বছরখানেক আগে তাঁদের কেউ গিয়েছিলেন চেন্নাই, কেউ বা বেঙ্গালুরুতে। লকডাউনে কাজ বন্ধ হওয়ায় অনেকেই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন জেলায়। কিন্তু যাঁরা থেকে গিয়েছেন, অনেক দুর্ভোগেও তাঁরা ফিরতে নারাজ। চেন্নাইয়ে থাকা মালদহের পরিযায়ী কয়েক জন শ্রমিক বলেন, ‘‘বাড়িতে ফিরলেও খাব কি? ওখানে তো কাজ নেই। সে জন্যেই তো এখানে এসেছি। আমরা টাকা পাঠালে সংসার চলছে।’’ তাঁরা জানিয়েছেন, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতে এখন ফের বহুতল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মজুরি ৮ ঘণ্টায় ৫০০ টাকা। ওভারটাইম করলে ৭৫০।
মালদহ জেলার প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, ১০ মে থেকে ট্রেন, বাস বা ট্রাকে বুধবার পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৪২০ জন পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। বেসরকারি হিসেবে তা লক্ষাধিক। জানা গিয়েছে, এখনও জেলার অনেক শ্রমিক রয়েছেন ভিন্ রাজ্যেই। তাঁদের বেশিরভাগই জেলায় ফিরতে নারাজ।
চেন্নাইয়ে কুট্টুমবাটুমে থাকা কালিয়াচকের যুবক সাবির সেখ বলেন, ‘‘মালদহে কাজ নেই বলেই গ্রামের ১৯ জনের সঙ্গে এক বছর আগে চেন্নাইয়ে এসেছিলাম। নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে একাধিক বহুতল তৈরির কাজ করেছি। রোজ কাজ পেতাম। কিন্তু লকডাউন হওয়ার পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমরা সাহস হারাইনি, নিরাশও হইনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ফের এখানে বহুতল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রোজ কাজ মিলছে। বাড়ি ফিরে ঘরে বসে থাকার মতো মানসিকতা আমাদের নেই।’’
হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর আরও এক পরিযায়ী শ্রমিক ফিলিপ টুডু বলেন, ‘‘লকডাউনেও কষ্ট করে এখানে থেকে গিয়েছি। বাড়ি ফিরে যাইনি কারণ ওখানে রোজ কাজ মিলবে না।’’ বেঙ্গালুরুতে থাকা কালিয়াচক মজমপুরের জিয়াউল শেখ বলেন, "লকডাউনে এক বেলা ভাত ও অন্য বেলা মুড়ি খেয়ে দিন কেটেছে। কিন্তু জেলায় ফিরছি না। এখানে বহুতল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজ করলেই মজুরি মিলছে ৭০০ টাকা। জেলায় ফিরলে এই মজুরি আমরা কল্পনা করলেও পাব না। সংসার চলবে না।"
বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় কাজ নেই এ কথা ঠিক নয়। ১০০ দিনের প্রকল্পে প্রচুর কাজ হয় জেলায়। যে পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ফিরেছেন তারা আবেদন করলেই ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পাবেন।’’