চ্যাংরাবান্ধা স্টেশন। —ছবি : সংগৃহীত
পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য বর্ষায় এমনিতেই ব্যবসা পড়তির দিকে থাকে। তার উপরে, ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায়, চিন্তা বেড়েছে কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের। শুক্রবার চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর বন্ধ থাকে। আজ, শনিবার সীমান্তে ফের বাণিজ্য শুরু হলে পরিস্থিতি কী হবে, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে অসুবিধায় পড়েন তাঁরা। কোটা-সংস্কারের দাবিতে চলা ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত বাংলাদেশে বন্ধ করে দেওয়ার হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। বিঘ্নিত হয়েছে টেলি-যোগাযাগ ব্যবস্থাও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বাইরের জগতের। এ দেশের ব্যবসায়ীরাও জানাচ্ছেন, ও পারের কোনও ব্যবসায়ীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না তাঁরা।
চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স দল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, ‘‘এখনও বড় ধরনের কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। তবে ফোনে আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তা কিছুটা অসুবিধা তৈরি করেছে। তবে শুক্রবার স্থলবন্দর বন্ধ থাকে। শনিবার বাণিজ্য শুরু হলে কি অসুবিধায় পড়তে হবে, তা বোঝা যাবে।’’ চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স দল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ কানুও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্য বাণিজ্যে এখনও সে ভাবে কোনও প্রভাব পড়েনি। ভবিষ্যতে কী হবে বলা কঠিন।
চ্যাংরাবান্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থ্লবন্দর। দীর্ঘ সময় ধরে ওই পথে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য চলে। এ ছাড়া, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যও ওই পথ ধরে হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত ওই পথ ধরে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশোটি ট্রাক যাতায়াত করে। আবার বাংলাদেশ থেকেও বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ট্রাক এ পারে আসে। তবে বর্ষা শুরু হতেই প্রায় অর্ধেক হয়ে যায় ট্রাক চলাচল। মূলত, ওই পথেই বাংলাদেশে পাথর নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে কাপড় জাতীয় জিনিস আনা হয় এ পারে।
এই স্থলবন্দরের পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর উন্নতি হলে, বর্ষার সময়েও ব্যবসার হাল ফিরবে। ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে জয়রাম রমেশ স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। সে সময়ে তিন মাসের মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস দিলেও, কাজ হয়নি। এই বর্ষাতেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ায় নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।