পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত বৃদ্ধ। —নিজস্ব চিত্র।
এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মহিলাকে ঘরে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক ৬৬ বছরের বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য শিলিগুড়ি মহকুমা ফাঁসিদেওয়া থানা এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বহু দিন ধরে একা বাড়িতে থাকেন অভিযুক্ত বৃদ্ধ। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অনেক দিন আগে বিচ্ছেদ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে এলাকার বাজারে ঘুরে বেড়ানো এক ভবঘুরে মহিলাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান বৃদ্ধ। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, আচমকা এক মহিলার চিৎকারের শব্দ শুনে তাঁরা ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যান। কিন্তু সেখানে যে দৃশ্য তাঁরা দেখেন, তাতে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন। তাঁরা প্রমাণ হিসাবে ওই দৃশ্যের ছবি তোলেন বলে দাবি করেছেন। এর পর বৃদ্ধকে আটকে রেখে খবর দেন পুলিশে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে গড়িমসি করে। নির্যাতিতা এক জন ভবঘুরে মহিলা শুনে গড়িমসি করে। কিন্তু তাঁদের চাপে অবশেষে অভিযুক্তের বাড়ি যায় পুলিশ। ভবঘুরে মহিলাকে উদ্ধার করে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, সেখান থেকে ওই ভবঘুরে মহিলাকে হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয়রা। পরে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা পূজা সিংহ বলেন, ‘‘আমরা এই নোংরা ঘটনায় অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরেছি। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে। তাদের বাড়ি থেকে বার করতে ভয় লাগছে আমাদের।’’ প্রায় একই কথা বলছেন স্থানীয় বাসিন্দা ঝর্না সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘এমন ব্যক্তিরা এলাকায় থাকলে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকবে না। অবিলম্বে প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, এটাই চাই। এক জন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে ঘরে নিয়ে এসে ধর্ষণ করা হচ্ছে, এটা অভাবনীয়। জঘন্য কাজ।’’ অভিযুক্ত বৃদ্ধের ভাইয়ের কথায়, ‘‘সম্পর্কে ও আমার দাদা। কিন্তু এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের পরিবারেও মহিলা রয়েছেন। তাঁদের কী পরিণতি হবে। আমি ওর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
এই ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অরুণ সিংহ বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েছি। তবে আমি বাইরে রয়েছি। প্রশাসনকে বলব, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’’ তবে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশকে একাধিক বার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।