ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে কোচবিহারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। শনিবার, কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল চত্বরে তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেইসঙ্গে সভার উদ্যোক্তাদের তরফে তৃণমূলের রাজ্য সহসভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, জেলা সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, সভায় কত লোক আসতে পারেন তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়। করোনা আবহ মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার কে কানন বলেন, “নিরাপত্তার সমস্ত রকম বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।”
পুলিশ, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য দু’টি হেলিপ্যাড তৈরির চিন্তাভাবনা হচ্ছে। শহরের পুলিশ লাইন ময়দানে একটি হেলিপ্যাড করার বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আর একটি হেলিপ্যাড এবিএন শীল ময়দান বা রাসমেলা মাঠ লাগোয়া এলাকায় করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এ দিন বলেন, “একটি মাঠ চূড়ান্ত হয়েছে। ভিডিয়ো কলে মাঠ সংশ্লিষ্ট কর্তাদের দেখানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। তারপরেই দ্বিতীয়টি চূড়ান্ত হবে।”
১৬ ডিসেম্বর কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সভার আগের দিনই হেলিকপ্টারে কোচবিহারে পৌঁছবেন তিনি। ১৫ ডিসেম্বর কোচবিহার শহরের সার্কিট হাউসে রাত্রিবাস করার কথা রয়েছে তাঁর। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ব্যাপারে পুলিশ, প্রশাসন-সহ বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।”
দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে। মূল মঞ্চ ছাড়াও সেখানে আরও দু’টি মঞ্চ করা হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতারা-সহ পুরো জেলা টিম মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে ঐতিহাসিক করার প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছি।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের কর্মিসভায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। এর জন্য দুই হাজার যানবাহনের ব্যবস্থা হচ্ছে। এ দিন পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত ওই বৈঠক শেষের কিছুক্ষণ আগে সেখান থেকে বেরিয়ে রবীন্দ্রনাথ মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন। বৈঠক শেষের পরে পার্থপ্রতিম-সহ অন্যরা রাসমেলামাঠে ওই মঞ্চের কাজের অগ্রগতি ঘুরে দেখেন। কর্মিসভার আগের দিন রাতে সার্কিট হাউসে দলের নেতাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করতে পারেন এমন সম্ভবনা নিয়েও দলের অন্দরে চর্চা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতার কথায়, সম্প্রতি দলের টিকিটে জয়ী কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক মিহির গোস্বামীর গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেছেন। জেলায় দলে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগও রয়েছে। দলনেত্রী নেতাদের কী বার্তা দেন, এখন সেই অপেক্ষায় কর্মীরা।