সরকারি বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র
গণশুনানি করে শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমা জুড়ে সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সে নির্দেশ বলবৎও রয়েছে বলে দাবি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। অথচ, শিলিগুড়ি পুরসভা কেবল ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না-বলে প্রচার শুরু করায় প্রশ্ন উঠেছে। যা নিয়ে সরব বিরোধী পুরপ্রতিনিধি থেকে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলিও।
এমনকি, মঙ্গলবার পুর বাজেটেও ৭৫ মাইক্রন পর্যন্ত ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ থাকার উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে ১২০ মাইক্রন পর্যন্ত নিষিদ্ধ আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা নিয়ে বাজেট সভাতেও বিষয়টি নজরে আনেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার তথা স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির তরফে আমাদের যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই মতো বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
এর আগে, কংগ্রেস পুরবোর্ডের সময় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ-মুক্ত শহর ঘোষণা হয় শিলিগুড়ি। তা নিয়ে রাজ্যের বাইরেও শিলিগুড়ির সুনাম ছড়ায়। অথচ, পরবর্তী কালে সেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রমরমিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফের চালু হওয়ায় না তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত বাম পুরবোর্ডের সময়ও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। তৃণমূলের বর্তমান পুরবোর্ড এবং তার আগে, তারা প্রশাসক বোর্ডে থাকার সময় কিছু ব্যবস্থা নিলেও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার মেয়র ৪ নম্বর বরোর কর্মী, আধিকারিকদের নিয়ে ডিআই ফান্ড বাজার, কালীবাড়ি রোড, কলাহাটি, মাছবাজার, মুড়িহাটি এলাকায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে সচেতনতা প্রচারে নামেন। পুরসভার তরফে এ দিন বিভিন্ন দোকানে ওই নির্দেশিকার নোটিস সাঁটানো হয়েছে, তাতে ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে সার্বিক ভাবে ১২০ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার, বিক্রি, উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমার জন্য সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। সুজয় বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে জেনেছি, জলপাইগুড়ি জেলার অধীন সংযোজিত ওয়ার্ডগুলো-সহ গোটা শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমায় সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালেই সে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। অথচ, পুরসভা কী করে ৭৫ মাইক্রনের নীচে ব্যবহার করা যাবে না বলে প্রচার করছে, বুঝতে পারছি না।’’ শিলিগুড়ির পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার্স ফাউন্ডেশন’-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসুও জানান, গণ-শুনানি করে শিলিগুড়ি পুর এবং মহকুমায় সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ করা রয়েছে। বর্তমান মেয়রও সে সময় গণ-শুনানির ব্যবস্থা করে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। ব্যবসায়ী বাসিন্দা কেউই তা ব্যবহার, মজুত, প্রস্তুত করতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘‘নির্দেশ মেনে সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ যাতে নিষিদ্ধ থাকে, তা কার্যকর করতে পুরসভাকে আমরা জানাব।’’