তৎপর: শনিবার পরিদর্শনে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ
ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজের ভেক্টর কন্ট্রোল টিম (ভিসিটি) এবং বাড়ি বাড়ি জ্বর ও ডেঙ্গির সমীক্ষা করছেন যে স্বাস্থ্য কর্মীরা, তাঁদের কাজে সমন্বয়ের অভাব ঘটছে। শনিবার শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভায় জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আগামী ২ থেকে ৪ নভেম্বর সরকারি ছুটি থাকলেও ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে যুক্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অক্টোবর মাসে শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ এক লাফে অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিরোধ কাজে জোর দিতে এ দিনের বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভিসিটি এবং বাড়িতে সমীক্ষার কাজে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয় বাড়াতে ৫ নভেম্বর বৈঠক ডাকা হয়েছে। কাউন্সিলরদের নিয়েই ওই বৈঠক হবে। ৬ নভেম্বর ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হবে।
পরে মেয়র বলেন, ‘‘ভিসিটি টিম এবং সমীক্ষার কাজে যে স্বাস্থ্যকর্মীরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ঘটছে। এই দু’পক্ষের মধ্যে দ্রুত সমন্বয় বাড়াতে হবে।’’ সেই সঙ্গে এ দিন বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অন্তত ৪টি জায়গায় রক্ত পরীক্ষার শিবির হবে। সেখান থেকে সচেতনতা প্রচার শুরু হবে। ডেঙ্গিতে যারা অসুস্থ হয়ে বাড়ি বা হাসপাতাল-নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন পুরসভার আধিকারিকরা। তাঁরা গিয়ে পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলবেন। কোনও সমস্যা হলে দেখবেন। ফগিংয়ের কাজ অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সে জন্য আরও পাঁচটি ফগিং মেশিন কেনা হবে। নিকাশি নালা আরও সাফ করার কাজে জোর দিতে হবে। স্প্রে করার কাজে ব্যবহৃত ‘ম্যালাথিয়ন’ তেল মশার ক্ষেত্রে ‘রেজিস্ট্যান্ট’ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প কী ব্যবস্থা করা যায়, তাই নিয়ে ভাবনা চলছে।
অভিযোগ, অনেক ওয়ার্ডে ভিসিটি এবং টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়নি। স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে জ্বর বা ডেঙ্গির রোগী দেখলে ভিসিটি-কে জানানোর নিয়ম। সেই মতো ভিসিটি গিয়ে ঘরের জমা জল ফেলে দেবে, আবর্জনা সাফের ব্যবস্থা করবে, এলাকা সাফসুতরো করবে। এই কাজগুলি ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
এ দিন নিজের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও মেয়র কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। ৬ নম্বরের চপ্পলপট্টি এলাকায় ফেলে রাখা টায়ারে যাতে জল না জমে থাকে, সে ব্যাপারে সতর্ক করেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার অভিযোগ তুলেছেন, সকালে তাঁর ২০ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার সাফাই কর্মীদের একজন মাত্র উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে দিয়ে সব কাজ হবে না দেখে তিনি সাফাই বিভাগে বারবার ফোন করে লোক পাঠাতে বলেন। অথচ সাফাই বিভাগ থেকে তাঁকে জানানো হয়, অধিকাংশ কর্মী ছট পুজোর ছুটিতে রয়েছেন। তাতে শহরের সাফাইয়ের কাজও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি মেয়র পরিষদের তরফে জানানো হয়, ছট পুজো থাকলেও সাফাই কর্মীদের কোনও ছুটি নেই। সব পরিষেবাই ঠিক থাকবে। তাঁর কথা এবং বাস্তব পরিস্থিতি যে অনেকটাই ফারাক তা স্পষ্ট বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এ দিন মেয়রও বলেন, ‘‘ছট পুজোর জন্য অনেক সাফাই কর্মী নেই। এর পরের বছর থেকে বিষয়টি আগাম ভাবা দরকার।’’