সাক্ষাৎ: আইনুলের বাড়িতে আবু হাসেম খান চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
জুয়ার ঠেক থেকে গ্রেফতার আইনুল খানের মৃত্যু ও মিলকি ফাঁড়ি পোড়ানোর ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে থাকা ভগবানপুর গ্রামে আজ শুক্রবার যাবেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মৌসম নুর। সূত্রের খবর, সন্ধেয় পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে কালীপুজোর আগেই মিলকি-সহ নিয়ামতপুর, ভগবানপুর এলাকায় শান্তি ফেরাতে প্রশাসনের তরফে বৈঠক ডাকার আর্জি জানাবেন তিনি। এ দিকে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ভগবানপুর গ্রামে গিয়ে আইনুলের পরিবার ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। সঙ্গে ছিলেন মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলমও। ডালুবাবুও মিলকি এলাকায় শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন।
নিয়ামতপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকার জুয়ার ঠেক থেকে গ্রেফতার করা ভগবানপুরের বাসিন্দা আইনুল খানের (৫৫) মৃত্যুকে ঘিরে রবিবার লক্ষ্মী পুজোর গভীর রাতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল মিলকি ফাঁড়ি ও হাসপাতাল চত্বর। গ্রেফতারের সময় ও পুলিশ লকআপে মারধরের ফলে আইনুলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে উত্তেজিত জনতা ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরায়। দু’টি পুলিশের গাড়ি ও ব্যারাক ভাঙচুর করা হয়। এই সুযোগে নিয়ামতপুরের জুয়ার ঠেক থেকে ধৃত আরও সাত জন অভিযুক্ত পালিয়ে বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ সেই রাতেই অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে। পরের দিন আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিকে অভিযোগ ওঠে, ধরপাকড়ের নামে পুলিশ ভগবানপুর গ্রামে তাণ্ডব চালায়। ফের ধরপাকড় হতে পারে এই আশঙ্কায় ভগবানপুর গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত। জানা গিয়েছে, দিনের বেলায় গ্রামে কিছু পুরুষ মানুষের দেখা মিললেও রাতে গোটা গ্রাম এখনও পুরুষশূন্য থাকছে।
এ দিকে এ দিন সন্ধেয় আইনুলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সাংসদ ডালু ও বিধায়ক মোত্তাকিন। ডালু দাবি করেন, ‘‘মিলকি পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ভগবানপুরের গ্রামবাসী জড়িত নেই। সুযোগ বুঝে দুষ্কৃতীরা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কিন্তু পুলিশ ধরপাকড়ের নামে ভগবানপুরে তাণ্ডব চালানোয় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে। আমরা চাই এলাকায় শান্তি ফিরুক।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ প্রথমে আইনুলের বাড়িতে যাবেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি গ্রামবাসীর সঙ্গেও এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন তিনি। এ ছাড়া, পুড়ে যাওয়া মিলকি ফাঁড়ি দেখে স্থানীয় পুলিশ কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন। দলীয় সূত্রে খবর, মিলকি থেকে ফিরে মৌসম পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করবেন। মৌসম এ দিন বলেন, ‘‘মিলকির ওই ঘটনার পরে এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে ভগবানপুর গ্রামের বাসিন্দারা ধরপাকড়ের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছেন বলে খবর রয়েছে। সে কারণে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে যাব। মৃতের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলব। সামনেই কালীপুজো। আমরা চাই পুলিশ-প্রশাসন এলাকায় শান্তি বৈঠক করুক। পুলিশ সুপারকে সেই আর্জি আমরা দলীয় ভাবে জানাব।’’