প্রতীকী ছবি।
প্রশাসনের তরফে কঠোর নির্দেশ রয়েছে যে লকডাউনের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান ছাড়া অন্য কোনও দোকান খুলবে না। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করেই শিলিগুড়ি শহরে খোলা হচ্ছে দোকান। এই প্রবণতা বন্ধ করতে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন বাজার সমিতির কর্মকর্তারা। তেমনই পুলিশের তরফেও শহরে নানা জায়গায় মাইক প্রচার করা হচ্ছে।
গত শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি নির্দেশিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে খোলা শুরু হয় অ-নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান। সেই ধারা এখনও চলছে বলে অভিযোগ। সোমবার ঘোঘমালি বাজার, শিবমন্দির বাজার এবং টিকিয়াপাড়া বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এরকম জিনিসের দোকান খুলেছে বলে অভিযোগ। গত কয়েকদিন ধরে ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফেও এমন কাজ যাতে না হয় তার জন্য নজরদারি চালানো হচ্ছে। বৃহত্তর ও শিলিগুড়ি খুচরো বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় মুহুরি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি এখনও কাটেনি। আমরা চেষ্টা করছি নজর রাখার। এরকম পরিস্থিতিতে রাজ্যের তরফেও একটু বাড়তি প্রচার করলে ভাল হয়।" গত দু'দিনে শহরের আনাজ বাজারগুলিতে ভিড় কিছুটা কম রয়েছে বলে দাবি করছেন তারা।
বিভ্রান্তি রয়েছে আনাজ বাজার এবং মুদি দোকান ক'টা পর্যন্ত খোলা থাকবে তা নিয়েও। এ ব্যাপারে প্রশাসনের তরফে সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকা নেই বলে ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ। বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশের তরফে আনাজ বাজার কোথাও বেলা এগারোটা, কোথাও বারোটা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হচ্ছে। মুদি দোকান বিকেল চারটে-ছয়টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। সোমবার প্রধাননগর থানা সকাল আটটা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খুলে রাখা যাবে বলে প্রচার করে। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় বলেন, "দোকান খুলে রাখার ক্ষেত্রে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ না থাকলেও এলাকাভিত্তিকভাবে পুলিশ যেরকম মনে করবে, সেরকমভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে পারে।"
নজর রাখছে পুলিশও। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, "রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও দোকান খোলা যাবে না। দোকান-বাজার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা থাকবে।"
গত শনিবার শিলিগুড়ির কয়েকটি বাজারে সেলুন এবং কাপড়ের দোকান, চিলড্রেন্স পার্কের কাছে বইয়ের দোকান খুলেছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু বাজার সমিতির কর্মকর্তারা গিয়ে সেগুলি বন্ধ করে দেন। যদিও দোকান খোলার ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে লকডাউন বিধি ভেঙে রাস্তায় বেরোলে অথবা অকারণে ঘুরে বেড়ালে পদক্ষেপ করছে পুলিশ। বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে শিলিগুড়ি পুলিশ। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হচ্ছে। গত দু'দিনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে দাবি তাদেরও। সোমবার বিকেল পর্যন্ত শিলিগুড়ি শহরে গ্রেফতারের সংখ্যা ৪৬।