জমজমাট: রবিবার সকালে এমনই ছবি দেখা গেল কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কোচবিহারের পুরপ্রশাসক ভূষণ সিংহ আক্রান্ত। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিষ্ণুব্রত বর্মণ, আক্রান্ত তিনিও। শনিবারই ভূষণের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে বলে দলীয় সূত্রের খবর। দিনকয়েক আগেই আক্রান্ত হন বিষ্ণুব্রতও। যদিও দু’দিন আগে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে খবর।
কোচবিহারে হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে উদ্বেগজনক ভাবে। তবে শাসক দলের এই দুই নেতার সংক্রমণের খবরে সেই উদ্বেগ আরও বাড়ল বিভিন্ন মহলে। কারণ, এই দুই নেতাকেই কয়েকদিন ধরে একাধিক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের কারণে
সংক্রমণ কতখানি ছড়াতে পারে সেই চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে শহরে। একই ভাবে, বিজেপির একের পর এক কর্মসূচি নিয়েও প্রশ্ন ও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে জেলা জুড়ে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বিষ্ণুব্রত ও ভূষণের সংস্পর্শে আসা অনেক নেতা-কর্মী এখনও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাচ্ছেন। তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। দলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিষ্ণুব্রত বর্মণের রিপোর্ট পজিটিভ এলেও দু’দিনের মাথায় নেগেটিভ এসেছে। তিনি চিকিৎসাধীন। আগের থেকে অনেকটা ভাল। তবে যে কর্মসূচি আমরা করছি, তা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হচ্ছে।” দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ‘গৃহ নিভৃতবাসে’ রয়েছেন। তিনি বিষ্ণুব্রত এবং ভুষণ দু’জনেরই সংস্পর্শে এসেছিলেন। পার্থপ্রতিম বলেন, “আমি পুরো সুস্থ। চিকিৎসকদের পরামর্শেই হোম আইসোলেশনে রয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে।” অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা জানান, জেলায় কোনও কর্মসূচি না করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা কোনও কর্মসূচির আয়োজন করব না। তৃণমূল কোথাও মিছিল-মিটিং করলে সেখানে কর্মীরা পাল্টা করবেন, এটাই স্বাভাবিক।”
লকডাউন পর্ব শিথিল হতেই কোচবিহারে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হয়। তৃণমূল ও বিজেপিকে একাধিক কর্মসূচি নিতে দেখা যায়। দিনকয়েক আগে বিজেপির ডাকা বনধে উত্তাল হয়ে ওঠে কোচবিহার। সেদিন দু’পক্ষই রাস্তায় নেমেছিল। ভুষণ, পার্থপ্রতিম, প্রবীণ তৃণমূল নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ, নিরঞ্জন দত্তরা একসঙ্গে মিছিলে অংশ নেন। আব্দুল জলিল জানান, ইতিমধ্যেই তিনি লালারস পরীক্ষা করেছেন। অসুস্থ বিষ্ণুব্রতর সঙ্গে তৃণমূলের কোচবিহার উত্তরের আহ্বায়ক পরিমল বর্মণ এবং দলের একাধিক নেতা-কর্মী দেখা করতে যান। তাঁকে কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেও তৃণমূল নেতা খোকন মিয়াঁ ও একাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বিষ্ণুব্রতর লালারসের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শহরবাসীর বক্তব্য, এই সময় সমস্ত দলের অফিস ও কর্মসূচি বন্ধ রাখা উচিত।